আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর এক দফা আন্দোলন কর্মসূচির কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করছে পুলিশ বাহিনী। এ কারণে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক মোতায়েনের জন্য আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) দল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছে সদর দপ্তর।
২৫ সেপ্টেম্বর থেকে আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত এক মাসের জন্য এপিবিএনের ৩৫০ জনের দল প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয় এপিবিএন সদর দপ্তর থেকে। নির্দেশনায় এপিবিএন দলের দায়িত্ব পালনের জন্য জ্বালানি, চালকসহ প্রয়োজনীয় যানবাহন এবং লজিস্টিকস প্রস্তুত রাখতেও বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র বলছে, ২৫ সেপ্টেম্বর হতে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত এপিবিএনের ওই ৩৫০ সদস্য স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। নির্দেশ পাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে তাঁরা দায়িত্ব পালনের জন্য দপ্তর ত্যাগ করবেন।
আগামী এক মাস তাৎক্ষণিক মোতায়েনের জন্য দল প্রস্তুত রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে এপিবিএনের পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে এই ফোর্স স্ট্যান্ডবাই রাখতে বলা হয়েছে। এর কারণ তিনি জানেন না।
তবে পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) এনামুল হক সাগর বলেন, শুধু বর্তমান কোনো পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে নয়, পুলিশ যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকে।
সূত্র বলেছে, এপিবিএন সদর দপ্তরের চিঠিতে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাৎক্ষণিক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে মোতায়েনের লক্ষ্যে ঢাকার ব্যাটালিয়নগুলো থেকে ৩০০ জন এবং ঢাকার বাইরের ব্যাটালিয়নের থেকে ৫০ জন সদস্যকে সার্বক্ষণিক নিজ নিজ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে স্ট্যান্ডবাই রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। ইউনিটগুলোর মধ্যে ১ এপিবিএন উত্তরার ৯০ জন, ২ এপিবিএন ময়মনসিংহের ৫০ জন, ৫ এপিবিএন উত্তরার ১০০ জন (একজন এএসপিসহ), ১১ এপিবিএন উত্তরার ৬০ জন, ১২ এপিবিএন উত্তরার ৫০ জনসহ মোট ৩৫০ জনকে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। নির্দেশ পাওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে দপ্তর ছেড়ে ঘটনাস্থলে যেতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এপিবিএনের এক কনস্টেবল বলেন, গতকাল একটি জরুরি বৈঠকে তাঁদের অনেককে ডাকা হয়। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। দিনের দুই ভাগে দুটি দল সব সময় প্রস্তুত থাকবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামী মাসটি আন্দোলনে থাকা দলগুলোর কাছে দাবি আদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে তারা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করবে। সরকার চাইবে পরিস্থিতি অনুকূলে রাখতে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই জনস্বার্থে পুলিশের এমন প্রস্তুতি হতে পারে।