যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হতে গিয়েও হলো না। দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসে নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে মতানৈক্যের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরে সরকার ও বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা আগামী ৪৫ দিনের জন্য অস্থায়ী বাজেট বা স্টপগ্যাপ বিল মঞ্জুর করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। কিন্তু স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশটির আইনপ্রণেতারা নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছিলেন না। তাই দেশটির সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। পরে গত শনিবার কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি আগামী ৪৫ দিনের সরকারি ব্যয় মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে একটি স্টপগ্যাপ বিল উত্থাপন করে।
ম্যাককার্থির উপস্থাপিত বিল কংগ্রেসের উভয় কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভস ও সিনেটে পাস হয়ে চূড়ান্ত স্বাক্ষরের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কার্যালয়ে পৌঁছে গেছে। বাইডেন বিলটিতে স্বাক্ষর করলে সেটি আইনে পরিণত হবে। নতুন অর্থবছর শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে এই আইনি কার্যক্রম শেষ হয়।
হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে ৩৩৫ জন আইনপ্রণেতা বিলটির পক্ষে ভোট দেন। বিপক্ষে ভোট দেন মাত্র ৯১ জন। এই ৯১ জনই বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির সদস্য। ৩৩৫ জনের মধ্যে ২০৯ জন ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি আইনপ্রণেতা ও ১২৬ জন রিপাবলিকান পার্টির। নিম্নকক্ষে বিলটি পাস হওয়ার পর তা পাঠানো হয় কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে। সেখানে বিলটি একপ্রকার বিনা বাধায় পাস হয়। বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ৮৮, বিরোধিতা করে মাত্র ৯ জন এবং এরা সবাই বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা।
বিলটি পাসের পর সন্তোষ প্রকাশ করে সিনেটের ডেমোক্র্যাট দলের নেতা চাক শুমার বলেন, ‘পুরো দিনটিই ছিল জটিল এবং ক্ষণে ক্ষণে রং বদলেছে। তার পরও মার্কিন জনগণের স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। আপাতত সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। আমাদের দ্বিপক্ষীয় মতৈক্য এটিকে সম্ভব করেছে এবং দেখিয়ে দিয়েছে প্রয়োজনের সময় কীভাবে এক হয়ে কাজ করতে হয়।’
এর আগে শনিবার সকালে স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থি বিলটি হাউসের নিম্নকক্ষে উপস্থাপন করেন। বিলটিতে প্রস্তাব করা হয়, কংগ্রেস আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের অনুমোদন দেওয়া হবে। পাশাপাশি ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার দুর্যোগ সহায়তা বিলও পাস করা হবে। তবে এই বিলে ইউক্রেনের জন্য কোনো সাহায্য প্রস্তাবের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।