মিকি আর্থারের অধীনে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান। ওভালে সেই ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছিল তারা। ছয় বছর পর ভারতের মাঠেই বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে বাবর আজমের পাকিস্তান। প্রধান কোচের ভূমিকা বদলে আর্থার এখন পাকিস্তান দলের পরিচালক। এবারও ফাইনালেই ভারতকে পেতে মুখিয়ে আছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান।
রাজনৈতিক অস্থিরতায় গত এক দশকে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়নি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে। সে কারণে আইসিসি ইভেন্টে তাদের ম্যাচের আগে উত্তেজনার পারদ থাকে উঁচুতে। ব্যাপারটা অন্য মাত্রা পেয়েছে ‘মওকা মওকা’ ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর। ২০১৫ বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে এ দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচের আগে সামাজিক মাধ্যমে দেখা যায় হাস্যরসাত্মক এই ভিডিও। তবে উত্তেজনার রেশটা থাকে এ পর্যন্তই। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের কাছে পাকিস্তানের হার একরকম ‘অলিখিত নিয়ম’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় পেয়েছে ভারত। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—কোনো বিভাগেই স্বাগতিকদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি পাকিস্তান।
ভারতের উড়ন্ত জয়ের প্রভাব পড়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলেও। +১.৮২ নেট রানরেট নিয়ে শীর্ষে এখন ভারত। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচে জয় দিয়ে শুরু করা পাকিস্তানের রানরেট প্লাস থেকে মাইনাসে নেমে গেছে গতকাল বিশাল ব্যবধানে হেরে।-০.১৩৭ নেট রানরেট নিয়ে বাবরের দল এখন রয়েছে ৪ নম্বরে। আর্থার যেন এই ভারতের বিপক্ষে ‘প্রতিশোধ’ নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যেখানে এই আহমেদাবাদেই হবে ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান দলের পরিচালক বলেন, ‘এই ভারতীয় দল দারুণ একটা ক্রিকেট দল। রাহুল ও রোহিতের নেতৃত্বে দলটি ভালো খেলছে। তাদের বেশ দারুণ মনে হচ্ছে। আমার মতে, তারা সবকিছুরই সমাধান করে ফেলেছে। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে খেলতে মুখিয়ে আছি।’
১ লাখ ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হয়েছে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়াম ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। যেদিকে চোখ গেছে, শুধু নীল আর নীল। ভারতের তেরঙ্গা পতাকা, নীল জার্সি পরা দর্শকদের ভিড়ে পাকিস্তানের ভক্ত-সমর্থকদের বলতে গেলে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। বিশ্বকাপের ম্যাচ হলেও আর্থার এটাকে আইসিসির ইভেন্ট বলতে নারাজ। পাকিস্তান দলের পরিচালক বলেন, ‘এটা তেতো সত্য যে আইসিসি ইভেন্ট মনেই হয়নি এটাকে। এটাকে একটা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ মনে হয়েছে। বিসিসিআইয়ের ইভেন্টই মনে হয়েছে। মাইক্রোফোনে আমি কখনোই দিল দিল পাকিস্তান গানটা শুনিনি।’