সঙ্গে গভীর সমুদ্রবন্দর, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথসহ ১৯ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী
উন্নয়ন ম্যাজিকে এবার মাতারবাড়ি। অপ্রতিরোধ্য গতিতে উন্নয়ন ঝলকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। জাতীয় অর্থনীতির গতি আরও বেগবানে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনায় জাপানি সাহায্য সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বিনিয়োগে নতুন চমক মাতারবাড়ি। অতীতের শুধুমাত্র লবণ চাষের স্পট অজ পাড়া গাঁ ছোট্ট মাতারবাড়ি দ্বীপটি এখন শহর। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ অনেক মেগা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের পর মাতারবাড়িকে ঘিরে এগিয়ে যাচ্ছে একগুচ্ছ মেগা উন্নয়ন প্রকল্প।
এসব প্রকল্প জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শুধু নতুন চমক নয়, একাধিক মেগাপ্রকল্পে অবিশ^াস্য গতিতে বদলে যাওয়া সমতল থেকে বিচ্ছিন্ন জনপদের নাম মাতারবাড়ি। বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে থাকা মাতারবাড়ি দ্বীপ দেশের অর্থনীতিতে নতুন লাইফলাইন প্রতিষ্ঠায় নতুন এক স্বপ্নপুরী বললেও অত্যুক্তি হবে না।
‘ব্লু-ইকোনমি’ নিয়ে জাইকার ‘বিগ-বি’ বাস্তবায়নের পরিকল্পনায় গড়ে ওঠা একগুচ্ছসহ প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ মেগাপ্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে আজ পর্যটন জেলা শহর কক্সবাজারে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প রয়েছে মহেশখালীর মাতারবাড়ি দ্বীপকে ঘিরে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় এরইমধ্যে অপরূপা শহুরে রূপ নিয়েছে মাতারবাড়ি দ্বীপ।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ সকালে কক্সবাজার যাচ্ছেন। দুপুরের আগে তিনি কক্সবাজারে নতুন নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে উদ্বোধন করবেন দোহাজারী-কক্সবাজার রুটের ১০২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের। এরপর বিকেলে যাবেন মাতারবাড়ি দ্বীপে। সেখানে তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, মাতারবাড়ি চ্যানেলসহ ২৫ মেগাপ্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সেখানকার পাওয়ার প্ল্যান্ট টাউনশীপ মাঠে মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
চট্টগ্রামের দক্ষিণ-পূর্বে পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলা। আর কক্সবাজার জেলার উত্তরে বিচ্ছিন্ন ভূখ- মহেশখালী। মূলত তিনটি দ্বীপ নিয়ে এ মহেশখালী। এগুলো হচ্ছে মহেশখালী, মাতারবাড়ি ও সোনাদিয়া। এছাড়া আরও দুটি ক্ষুদ্র দ্বীপ রয়েছে। তবে এ দ্বীপগুলোতে কোনো জনবসতি নেই। মহেশখালী দ্বীপের আরও উত্তরে বিচ্ছিন্ন ছোট উপদ্বীপ মাতারবাড়ির অবস্থান। এটি মহেশখালীর ক্ষুদ্র একটি ইউনিয়ন। মাত্র ১২ বর্গ কিলোমিটারের এ দ্বীপ।
দেশের অর্থনীতির গেমচেঞ্জার হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে দ্বীপটি। এই দ্বীপকে নিয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে একাধিক মেগা প্রকল্পের। যে কারণে অর্থনীতিবিদদের মতে, এই দ্বীপই হচ্ছে আগামী দিনের বিজনেস হাব। ফলে অর্থনীতির কর্মকা- নিয়ে দেশে সম্ভাবনার নতুন আরেকটি দুয়ার খুলে যাচ্ছে। ভূপ্রকৃতিগত অপার সুযোগ থাকার কারণে জাইকার সমীক্ষায় উঠে আসে মাতারবাড়িকে নিয়ে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার উন্মোচনের। সে সম্ভাবনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে অবহেলিত ও অনগ্রসর জনপদ মাতারবাড়ি এখন আলোয় উজ্জ্বল। সরকারের ‘গ্রাম হবে শহর’- স্লোগানের ধারাবাহিকতায় মাতারবাড়ি এখন পরিণত হয়েছে টাউনশিপে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার অঞ্চলে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তারমধ্যে এই মাতারবাড়িতেই রয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প। এর আগে কল্পনায়ও ছিল না ছোট্ট একটি দ্বীপকে ঘিরে এতসব মেগা প্রকল্প যে বাস্তবায়ন হতে পারে। কিন্তু সরকারের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় যুক্ত হয়েছে এ দ্বীপ। ইতোমধ্যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের ছোঁয়ায় আমূল বদলে গেছে মাতারবাড়ি দ্বীপটির পুরো জনপদ।
উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশ বিশে^র সবচেয়ে বড় ব-দ্বীপ। এর রয়েছে বঙ্গোপসাগরের বিশাল সমুদ্রসীমা। এই জলসীমার অভ্যন্তরে রয়েছে সম্পদের বিশাল ভা-ার। একে কেন্দ্র করে জাইকার অর্থায়নে সরকারের ব্লুইকোনমি, গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠাসহ বহুমুখী মহাপরিকল্পনা।
উন্নত বিশে^র বহু দেশ গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজেদের অর্থনীতিকে মজবুত করেছে। জাইকার সমীক্ষায় উঠে এসেছে দেশে গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠায় মাতারবাড়িই হচ্ছে সেরা স্পট। আর এ কারণেই মাতারবাড়িকে ঘিরে উন্নয়নের মহাযাত্রা। ফলে এরইমধ্যে দেশের উন্নয়ন চিত্রে ভিন্ন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে এই মাতারবাড়ি।
এ দ্বীপ ঘিরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ১২শ’ মেগাওয়াট ক্ষমতার আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। এ প্রকল্প পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন হলে ১২শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। প্রথম ধাপে নির্মিত প্রথম ইউনিট থেকে ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। সাগর থেকে মাটি এনেই এ প্লান্টের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নতুন ভূমি। আর এ ভূমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে এ বিদ্যুৎ প্রকল্প।
এদিকে, ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। যার নাম ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর।’ এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন আরেকটি ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর। এরইমধ্যে নির্মিত হয়েছে মাতারবাড়ি বন্দর চ্যানেল। প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম এলএনজি টার্মিনাল।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিষ্ঠা করেছে সমুদ্র তলদেশে জ্বালানি তেল সরবরাহের ডাবল পাইপ লাইন প্রকল্প। সমুদ্রবক্ষে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ভাসমান অয়েল টার্মিনাল। যার নাম এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপ লাইন)। এ প্রকল্প উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল আরও আগে। কিন্তু উদ্বোধনের প্রাক্কালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তা পিছিয়েছে। চলতি মাসেই এর উদ্বোধনের কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ইস্টার্ন রিফাইনারির (ইআরএল) মহাব্যবস্থাপক মো. লোকমান।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানি সহযোগিতা ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যমান। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশী মালিকানার আওতায় যে বিশাল সমুদ্র অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হয়েছে সেখানে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো নির্মাণে জাপান ‘বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ’- বেল্ট বা ‘বিগ বি’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালে এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ ‘বিগ-বি’ বাস্তবায়নের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে মাতারবাড়িকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ভূ-অবস্থানগত সুবিধার কারণে এ মাতারবাড়িই হতে যাচ্ছে আগামী দিনের নতুন বিজনেস হাব। দেশের ব্লু ইকোনমির পথ সুগম করবে এ মাতারবাড়ি।
জাইকার সমীক্ষায় বলা আছে, মহেশখালীর মাতারবাড়ি চ্যানেল ও জাপানের কাশিমার ভূ-প্রকৃতি প্রায় একই ধরনের। এ চ্যানেল তৈরির মাধ্যমে সংযুক্ত হবে বড় বড় বাণিজ্যিক জাহাজ তথা মাদার ভ্যাসেল ভেড়ার পথ। জাপানের কাশিমার আদলেই তৈরি হবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলে মাতারবাড়িতে শুরু হয় উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের প্রক্রিয়া। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই হয় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (ইআইএ) প্রতিবেদন অনুমোদন হয় এরপরের মাসে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি অনুমোদন পায় ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে।
বিদ্যুৎ প্রকল্প ॥ মাতারবাড়িতে ১২শ’ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এজন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা। এর দুটি ইউনিট। প্রথম ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আজ। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও ধলঘাট ইউনিয়নের ১৬০৫ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে এ বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট। বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কয়লা পোড়ানোর ছাই মজুতের জন্য ২৫৫ হেক্টর জমিতে খনন করা হয়েছে কূপ। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ (সিপিজিসিবিএল) এর অধীনে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন, তোশিবা করপোরেশন, আইএইচআই করপোরেশনের কনসোর্টিয়াম এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, প্রথম ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে গত ২৯ জুলাই। প্রথম ইউনিটের একসঙ্গে ৬১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে। গত ২২ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুরো মাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখানে দৈনিক ১৩১০৪ টন কয়লা পোড়ানো হবে। এজন্য কয়লা খালাসের জেটি ও সাইলো নির্মিত হয়েছে। সাইলোতে ৬০ দিনের কয়লা মজুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেটিতে মাদার ভ্যাসেল বেড়াতে খনন করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার লম্বা ও ৩শ’ মিটার প্রস্থের চ্যানেল। নাব্যতা নিশ্চিতে সেডিমেন্টেশন মিটিগেশন ডাইক করা হয়েছে। এতে করে বছর বছর চ্যানেল ড্রেজিং করার প্রয়োজন হবে না। এছাড়া বিদ্যুৎ প্রকল্পটি যাতে সাইক্লোন বা জলোচ্ছ্বাসের কবলে না পড়ে ১৪ মিটার উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ২০১৪ সালে ঋণ চুক্তি হয়। এ প্রকল্পে ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি ৩ লাখ টাকা দিচ্ছে জাইকা। অবশিষ্ট ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবির নিজস্ব তহবিল থেকে।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর ॥ দেশে গড়ে উঠছে নতুন নতুন শিল্পজোন। বাড়ছে আমদানি রপ্তানি। আগামীতে এ প্রবৃদ্ধি সামলাতে ডিপ সি পোর্ট বা গভীর সমুদ্র বন্দর অপরিহার্য। সে লক্ষ্যেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। বিশাল আকৃতি বা মাদার ভ্যাসেল ভেড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে মাতারবাড়িতে নির্মিত হয়েছে টার্মিনাল। গত ২১ সেপ্টেম্বর এ টার্মিনাল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে সিপিজিসিবিএল। খনন করা হয়েছে চ্যানেল। আজ এ চ্যানেলের উদ্বোধন। প্রস্তুতি চলছে গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে আজ। ১৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মিত হবে গভীর সমুদ্র বন্দর।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণও বাড়ছে। এতে চাপ বেড়েছে এ সমুদ্র বন্দরের। ফলে বাড়তি জাহাজ ভেড়ানোর ও কন্টেনার হ্যান্ডিলিংয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন নামে সরকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। এর আওতায় মহেশখালীর মাতারবাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। এর নাম হবে ‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর’। এ বন্দর সড়ক, রেল ও সমুদ্রপথে সংযুক্ত থাকবে। গড়ে উঠবে নতুন কানেক্টিভিটি। চকরিয়ার বদরখালী হয়ে মহেশখালীর সঙ্গে ইতোমধ্যে সংযোগ সড়ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
জাইকার অর্থায়নে ও নৌ মন্ত্রণালয়ের আওতায় মাতারবাড়ি ও ধলঘাট ইউনিয়নের ১০৩১ হাজার একর ভূমি নিয়ে প্রতিষ্ঠা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকার ঋণ ১২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তহবিল থেকে ২ হাজার ২১৩ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে ২ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর পরিচালিত হবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে। এরপরের বছরের ডিসেম্বর থেকে জাহাজ ভেড়ানোর টার্গেট রয়েছে। মাতারবাড়ি বন্দরের অংশ, সড়ক ও মহাসড়ক বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ প্রকল্পের মধ্যে থাকছে ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যরে কন্টেনার জেটি, ৩শ’ মিটার দৈর্র্ঘ্যরে মাল্টিপারপাস জেটি এবং ১৪০৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে চ্যানেল। চ্যানেলের গভীরতা ১৬ মিটার, প্রস্থ হবে ৩৫০ মিটার।
বন্দরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে জাহাজ আগমন বৃদ্ধির হার ১১ শতাংশ হারে বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে কন্টেনার হ্যান্ডিলিংয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৪ মিলিয়ন টিইইউএস। এর পাশাপাশি জাহাজের সংখ্যাও বাড়বে। এত বিপুল পরিমাণ জাহাজ হ্যান্ডেলিংয়ের সুবিধার জন্য মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নব খননকৃত চ্যানেল দিয়ে বার্থিং নিয়ে প্রায় ৮০ লাখ টন কয়লা খালাস করেছে ১০টি মাদার ভ্যাসেলসহ ছোটবড় বহু জাহাজ। এ বন্দর পুরোপুরি চালু হলে ৮ হাজার ২০০ টিইইউএস কন্টেনার বহনকারী জাহাজ এতে নোঙ্গর করতে পারবে। এতে করে বাংলাদেশ থেকে পণ্য নেওয়া ও পাঠানোর ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর, কলম্বো, মালয়েশিয়ার টান্সশিপমেন্ট বন্দরের জন্য আর অপেক্ষা করতে হবে না দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে কক্সবাজারে নবনির্মিত আইকনিক রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গণে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ট্রেন চলাচলের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর ট্রেনযোগে তিনি যাবেন রামু পর্যন্ত। ফলে দীর্ঘ সময়ের পর কক্সবাজার দেশের রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ইতোমধ্যে নতুন এ রেলপথের চলাচলের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানি করা লাল সবুজের ট্রেনের কোচ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে নেওয়া হয়েছে গত মঙ্গলবার। আজ নতুন এ রেলপথের উদ্বোধন হলেও এর বাণিজ্যিক চলাচল শুরু হবে পরে দিনক্ষণ ঘোষণার মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহায়তায় দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত চলমান রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে, যার ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। মেয়াদ বৃদ্ধি করে তা আগামী বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা চলতি বছরই সম্পন্ন হচ্ছে। ২০১০ সালে এ রেলপথটি নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটারের রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে কক্সবাজারের রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তের কাছে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু ভূরাজনৈতিকগত জটিলতা ও এডিবি অর্থ ছাড় না দেওয়ায় দ্বিতীয় অংশের কাজ এখনো শুরু হয়নি।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রকল্পের দোহাজারী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, হারবাং, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ইসলামাবাদ, রামু ও কক্সবাজার পর্যন্ত নয়টি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। সরকারের এই মাইলফলক প্রকল্পটি কক্সবাজারসহ চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও পাল্টে দেবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। পরিবহন ব্যয় সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আরামদায়ক হিসেবে রেলকে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রকল্প গ্রহণ করেন।
কক্সবাজারে ঝিনুকের আদলে তৈরি আইকনিক স্টেশনটিতে আবাসিক হোটেলের পাশাপাশি ক্যান্টিন, লকার, গাড়ি পার্কিংসহ বিভিন্ন আধুনিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পর্যটকরা যাতে স্টেশনের লকারে লাগেজ রেখে সারাদিন সমুদ্র সৈকতে বা দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে পারেÑ এ ব্যবস্থাটাও করা হয়েছে। সমুদ্র সৈকত থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কক্সবাজার আইকনিক স্টেশনটি নিয়ে দেশের মানুষের আগ্রহ রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন স্টেশনটি ইতালি, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন আধুনিক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় রেখে নির্মাণ করা হয়েছে।
এসপিএম প্রকল্প ॥ মাতারবাড়িকে ঘিরে জ্বালানি সেক্টরে রচিত হয়েছে নতুন মাইলফলক। বিদেশ থেকে জ্বালানিতেল আমদানির পর যুগ যুগের ব্যয়বহুল লাইটারিং পদ্ধতির অবসান ঘটাতে প্রতিষ্ঠা হয়েছে ফাস্ট ফিলিংয়ের এসপিএম (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) উইথ ডাবল পাইপ লাইন। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পের ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনিংয়ের কথা ছিল গত ২৪ জুন। কিন্তু এর পূর্ব মুহূর্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে এখন প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্নের পথে। উদ্বোধন হবে চলতি মাসের শেষার্ধে। জানিয়েছেন ইস্টার্ন রিফাইনারির মহাব্যবস্থাপক মো. লোকমান।
সাত হাজার কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে মাতারবাড়ির সমুদ্রবক্ষে ও কূলে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এসপিএম প্রকল্প।
সমুদ্রবক্ষে স্থাপন করা হয়েছে ভাসমান বয়া। বয়া থেকে পাম্পিংয়ের মাধ্যমে জ্বালানি তেল যাবে সাগরকূলে প্রতিষ্ঠিত স্টোরেজ ট্যাংকে। সেখান থেকে পুনরায় পাম্পিংয়ের মাধ্যমে তেল চলে যাবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারির ট্যাংকে। এ জন্য মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামের রিফাইনারি পর্যন্ত সাগরের তলদেশ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে দুটি পাইপ লাইন। একটি দিয়ে আসবে ক্রুড অয়েল। অপরটি দিয়ে আসবে ডিজেল।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে জ্বালানি তেলের চাহিদা ৬০ লাখ টনেরও বেশি। এর পুরোটাই আমদানিনির্ভর। চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে আমদানির জ্বালানি তেল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজের মাধ্যমে কুতুবদিয়ার অদূরে বহির্নোঙ্গর থেকে লাইটারিং করা হয়ে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় বিপিসির বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়। বাড়তি সময়ও লেগে যায়। এসপিএম প্রকল্প চালু হলে মাতারবাড়ির স্টোরেজ ট্যাংক থেকে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পৌঁছতে সময় নেবে মাত্র ২৪ ঘণ্টা। আর জাহাজ থেকে স্টোরেজ ট্যাংকে তেল খালাসে সময় নেবে ৪৮ ঘণ্টা। অফশোর ও অনশোর মিলে মোট ২২০ কিলোমিটার পাইপলাইন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে সাগরের তলদেশে স্থাপিত হয়েছে ১৪৬ কিলোমিটার এবং স্থলভাগে বসানো হয়েছে ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইন।
আমদানির তেল জাহাজ থেকে খালাসের পর স্টোরেজের জন্য মাতারবাড়ির ৯০ একর জমির ওপর ৬টি স্টোরেজ ট্যাংক ও পাম্পস্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। ৩টি ট্যাংকে থাকবে ডিজেল, অপর ৩টিতে থাকবে ক্রুড অয়েল। প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৬০ হাজার ঘনমিটার। এসপিএম প্রকল্প চালু হলে দেশের যুগ যুগান্তরের ব্যয়বহুল লাইটারিং পদ্ধতির অবসান হবে। আর এতে করে বিপিসির বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার সাশ্রয় হবে।
এলএনজি টার্মিনাল ॥ মাতারবাড়িতে ইতোমধ্যে ৫০০ ঘনফুট বা এমএমসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর একটির দায়িত্বে রয়েছে সামিট গ্রুপ, অন্যটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি। দেশে এটিই প্রথম এলএনজির ল্যান্ডিং স্টেশন।
দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এলএনজি আমদানি এবং রিগ্যাসিফিকেশনের মাধ্যমে গত ২০১৮ সালের আগস্টে সর্বপ্রথম জাতীয় গ্যাস গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয়। এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেডের ( ইইবিএল) সঙ্গে পেট্রো বাংলার চুক্তি স্বাক্ষর ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই। নির্মাণ শেষে ২০১৮ সালের ১৯ আগস্ট থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু করে কোম্পানিটি। ১৫ বছর মেয়াদি এ টার্মিনাল দিয়ে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি রয়েছে ২০৩২ সাল পর্যন্ত। তবে এরই মধ্যে এ টার্মিনালের চুক্তির মেয়াদ ২০৩৮ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
একইভাবে মহেশখালীতে সামিট গ্রুপ এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল গ্যাস সরবরাহ শুরু করে কোম্পানিটি।
যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ কক্সবাজারে মেগাসহ ১৯ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মধ্যে ১৫টি উদ্বোধন ও ৪টির শিলান্যাস করার কর্মসূচি রয়েছে।
উদ্বোধন হবে ॥ দোহাজারী-কক্সবাজার ১০১ কিলোমিটার রেলপথ, মহেশখালীর মাতারবাড়ি ১২শ’ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল, কুতুবদিয়ায় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়ন প্রকল্প, কৈয়ারবিল ঠা-া চৌকিদারপড়া ষাট মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প, কক্সবাজারে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ (চতুর্থ পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণ, টেকনাফের মাল্টিপারপারস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প, রামুতে জোয়ারিয়ানালা ইউপি-মোহসিনা বাজার ভায়া নন্দাখালী সড়কে ১৮৪ মিটার দীর্ঘ আর্চ ও আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প, রামুতে ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি প্রকল্প, কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাঁকখালী নদীর কস্তুরিঘাটে ৩৯৫ মিটার পিসি বক্স গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ, চকরিয়া বাস টার্মিনাল সম্প্রসারণ কাজ, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সমন্বিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প, রত্নাপালং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মরিচাপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মহেশখালী ইউনুসখালী নাজির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মাণ, মহেশখালীর গোরকঘাটা সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প ইত্যাদি।