ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে পুঠিয়ার বানেশ্বর এবং পবার খড়খড়ি এলাকায় বসা দুটি হাটের কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। দুটি হাট এলাকায় সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক জানযট। আবার ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
বিশেষ করে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় সপ্তাহে দুই দিন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারী এবং যাত্রী সাধারণকে। আর খড়খড়ি এলাকায় প্রতিদিন ভোর থেকে সকাল অন্তত ১১ টা পর্যন্ত লেগে থাকছে যানজট। এখানেও ভোগান্তির পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা। হাট ইজারার নামে প্রতি বছর সরকারের কোষাগারে যেমন কোটি কোটি টাকা জমা হয়, তেমনি প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালীদের পকেটেও ঢুকে লাখ লাখ টাকা। কিন্তু জনসাধারণের ভোগান্তি নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ভোগান্তির মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
সরেজমিন মঙ্গলবার সকালে রাজশাহীর বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কটি এমনিতেই অনেকটা ব্যস্ততম। নাটোর পর্যন্ত দুই লেন হওয়ায় এই রাস্তাটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মাঝে-মধ্যেই ঘটে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। ২০১৯ সালে এই মহাসড়কে বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে দেশের সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১৯ জন আগুন পুড়ে নিহত হয়েছিলেন কাটাখালি এলাকায়। সেখান থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত বানেশ্বর বাজার। কৃষি ফসল কেনা-বেচার জন্য উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহৎ হাটের মধ্যে একটি হলো বানেশ্বর। এই বাজারের একেবারে মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক। বাজার এলাকার কিছু অংশ ফোর লেন হলেও বাঁকি অন্তত ৯০ ভাগই দুই লেন মহাসড়ক। আবার এই বাজারের অধিকাংশ কৃষিপণ্য বিক্রি হয় রাস্তার দুই ধারে।
ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের চারদিন এখন বসে হাট। শুক্র-শনি এবং সোম-মঙ্গলবার বসে কলার হাট। আর শনিবার ও মঙ্গলবার বসে মূল হাট। ফলে এই দুই দিন সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় যাত্রীসাধারণ ও পথচারীদের। হাটের কলেজ গেট থেকে একেবারে শিবপুর পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট লেগে থাকে সেই ভোর থেকে। চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
কারণ এ হাটে ভোর বেলা থেকেই শুরু হয় কেনা-বেচা। বছরের পর বছর ধরে এভাবে চলে আসছে এই হাটটি। এখন হাটে কৃষিপণ্য কেনা-বেচার পরিমাণ বেড়েছে ১০ বছর আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন। আবার ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু হাটের বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়নি। ফলে একেবারে মহাসড়কের ওপরেই বসে অধিকাংশ দোকান-পাট এবং চলে কৃষি পণ্য কেনা-বেচা কাজ। এতে করে এই হাটের গোটা অংশে যানজাট লেগেই থাকে সপ্তাহের দুদিন। হাটের ভিতর দিয়ে দ্রুতগামী বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার থেকে শুরু করে বিভিন্ন যানবাহন চালাতে হয় শম্বুক গতিতে। তার পরেও অধিকাংশ সময় জটের কারণে যানবাহন আটকে ঘন্টার পর ঘন্টা।