স্মার্টফোন নির্মাতারা প্রতি বছরই বাজারে নিয়ে আসছে উদ্ভাবনী ফিচারযুক্ত নিত্যনতুন স্মার্টফোন। বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ড থেকে এগিয়ে থাকতে নতুন মডেল আনার ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডটি নজর দিচ্ছে গ্রাহকদের চাহিদা আর স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে। ব্যবহারকারীদের স্মার্টফোন ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে যুক্ত করছে চমকপ্রদ ক্যামেরা ফিচার, শক্তিশালী চিপসেট, অধিক র্যাম ইত্যাদি। তবে, ইদানিং এসব ফিচারের সাথে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ফোনের রিফ্রেশ রেট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরামহীন স্ক্রলিং আর তরুণদের মাঝে ফোনে গেম খেলার ঝোঁক বৃদ্ধি পাওয়ায় স্মার্টফোনের অভিজ্ঞতা ও পারফরমেন্সের ক্ষেত্রে রিফ্রেশ রেট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, রিফ্রেশ রেট স্মার্টফোনের একটি উল্লেখযোগ্য ফিচার হওয়া সত্ত্বেও অনেকের এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা নেই। মূলত রিফ্রশ রেট বলতে বোঝায় ফোনের ডিসপ্লে প্রতি সেকেন্ডে কতোবার আপডেট বা রিফ্রেশ হয় সেই সংখ্যাকে। সাধারণত ফোনে ৬০ হার্টজ, ৯০ হার্টজ, ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট দেখা যায়। রিফ্রেশ রেট যতো বেশি হবে, ফোন ততো স্মুথ চলবে এবং ছবি ও ভিডিও ততো স্পষ্ট দেখা যাবে। অর্থাৎ, ১২০ হার্টজ, ৯০ হার্টজ বা ৬০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট যুক্ত স্ক্রিনের থেকে অধিক স্মুথ পারফরমেন্স দিবে। গেম খেলার ক্ষেত্রে ফোনের রিফ্রেশ রেট বেশি হলে আরও স্মুথ ট্রানজিশন হবে, ফলে গেমিং হবে আরও আনন্দদায়ক।
গেমিং, স্ক্রলিং আর কনটেন্ট উপভোগে অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে স্যামসাং নিয়ে এসেছে ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটযুক্ত স্যামসাং গ্যালাক্সি এম৩৩ ফাইভজি। সাশ্রয়ী মূল্য পরিসরের ফোনে এতো বেশি রিফ্রেশ রেট একেবারেই দেখা যায় না। ফোনটিতে রয়েছে ৬.৬ ইঞ্চির এফএইচডি+ ইনফিনিটি ভি ডিসপ্লে ও স্যামসাংয়ের অন্য স্মার্টফোনগুলোর মতো ডলবি অ্যাটমস সাউন্ড সিস্টেম। এই ডিসপ্লে ও সাউন্ড সিস্টেমের সাথে অধিক রিফ্রেশ রেট থাকায় ফোনটিতে গেম খেলার পাশাপাশি ওয়েব ব্রাউজিং ও ভিডিও দেখার অভিজ্ঞতাও হবে অসাধারণ।
রিফ্রেশ রেট বেশি হলে স্বাভাবিকভাবেই শক্তিশালী ব্যাটারি প্রয়োজন হবে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে গ্যালাক্সি এম৩৩ ফাইভজিতে যুক্ত করা হয়েছে সুবিশাল ব্যাটারি। ২৫ ওয়াট ফাস্ট চার্জিংয়ের সাথে ৬,০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের সুবিশাল ব্যাটারি ব্যবহারকারীকে দিন-রাত চার্জ দেয়ার চিন্তা ছাড়াই ফোন ব্যবহারের সুযোগ দিবে। মাত্র ত্রিশ মিনিটে ফোনটি ৫০ শতাংশ চার্জ হয়ে যায়। আর ফোনটির অ্যাডাপ্টিভ পাওয়ার সেভিং মোড ও অ্যাপ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ব্যবহারকারীর ব্যবহারের ধরন অনুযায়ী অ্যাপ অপ্টিমাইজ করবে। তাই বিশেষ করে, যেসব তরুণরা ফোনে গেম খেলতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য একে বাজারের সেরা ফোন বলা যায়।
সুবিশাল ব্যাটারি ছাড়াও গ্যালাক্সি এম৩৩ ফাইভজি’তে রয়েছে এক্সিনস ১২৮০’র মতো শক্তিশালী প্রসেসর। ফলে, অনেক উন্নত গেমিং পারফরমেন্স যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি ৫ ন্যানোমিটার প্রসেসর হওয়ায় ফোনে হিটিং সমস্যা বা দ্রুত ব্যাটারি শেষ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। ফোনটিতে এআই ভিত্তিক গেম বুস্টার থাকার কারণে আরও ঝামেলাহীনভাবে গেম খেলা যাবে এবং ডিসকর্ড প্রিবিল্ট থাকায় গেম খেলার সময়ে সহজে টিমের অন্যদের সাথে ভয়েস চ্যাট করা যাবে। এমনকি যেসব গেমে ভয়েস চ্যাটের সুবিধা নেই সেসব গেমেও ডিসকর্ড ব্যবহার করে ভয়েস চ্যাট করা যাবে। আর অসাধারণ পাওয়ার কুল টেকনোলজি থাকায় দীর্ঘক্ষণ গেম খেললে বা মোবাইল ব্যবহার করলেও ফোনে হিটিং ইস্যু হবে না। এছাড়া, হাইপার ফাস্ট ফাইভজি সাপোর্ট থাকায় অনলাইনে গেম খেলা বা ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে বাফারিংয়ের সমস্যা হবে না এবং সবচেয়ে দ্রুতগতির সুবিধা উপভোগ করা যাবে।
ভিড় বা হট্টোগোলের মাঝে কল আসার পর অপর পক্ষের কথা শুনতে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য এই স্মার্টফোনে রয়েছে এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন ফিচার। যারা ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে ভালোবাসেন তাদের জন্য ফোনটিতে রয়েছে ৫০ মেগা পিক্সেল মেইন ক্যামেরা, ৫ মেগা পিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা, ২ মেগা পিক্সেল ম্যাক্রো ক্যামেরা ও ২ মেগা পিক্সেল ডেপথ ক্যামেরার কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ। এই ক্যামেরা দিয়ে আপনি অল্প আলোতেও ঝকঝকে ছবি তুলতে পারবেন। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনাকে এগিয়ে রাখতে ফোনটিতে রয়েছে ৮ মেগা পিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা।
স্যামসাংয়ের এই ফোনটি ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি রমের ভ্যারিয়েন্টে পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে করপোরেট ও গেমাররা, যারা কিনা ফোনে অনেক অ্যাপ ব্যবহার করে থাকেন তাদের জন্য আছে র্যাম প্লাস সুবিধা। নজরকাড়া ডিজাইনের এই ডিভাইসটি ব্লু, গ্রিন ও কপার - এই তিনটি রঙে পাওয়া যাচ্ছে। ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেটের পাশাপাশি বিশাল ব্যাটারির সাথে গেম বা ভিডিও উপভোগ করতে মাত্র ৩০,৯৯৯ টাকা বাজারদরে কিনে নিতে পারেন চমৎকার এই ফোনটি।