যুক্তরাজ্যের পর এবার অস্ট্রেলিয়াও খগড়হস্ত হতে যাচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থী ও শ্রমিকদের ওপর। বিশেষ করে অদক্ষ শ্রমিকদের অস্ট্রেলিয়া কঠিন হয়ে যাবে। স্থানীয় সময় আজ সোমবার অস্ট্রেলিয়া সরকার ঘোষণা দিয়েছে, বিদেশি শিক্ষার্থী ও অদক্ষ জনবলের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ভিসানীতি কঠিন করা হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া সরকার বর্তমান অভিবাসননীতিকে ‘ভাঙাচোরা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। এবং আগামী দুই বছরের অভিবাসী গ্রহণ বর্তমানের অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছে। নতুন নীতিমালার অধীনে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার পরীক্ষায় উচ্চতর রেটিং পেতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দফার ভিসার আবেদন অধিকতর যাচাই-বাছাই করা হবে।
এই বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেয়ার ও’নেইল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমাদের এই কৌশল আমাদের দেশে অভিবাসী গ্রহণের পরিমাণকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নামিয়ে আনবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি কেবল অভিবাসীর সংখ্যা, নির্দিষ্ট কোনো সময় বা আমাদের দেশে বর্তমানে অভিবাসীদের কারণে কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে সে বিষয়ে নয়। এটা অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যতের প্রশ্ন।’
ও’নেইল জানান, সরকারের এই সংস্কার পদক্ষেপ এরই মধ্যে বিদেশি অভিবাসনের ওপর নিম্নমুখী চাপ সৃষ্টি করেছে। এই নীতি অভিবাসী সংখ্যার প্রত্যাশিত হ্রাসেও অবদান রাখবে। তবে এই নীতি কবে থেকে কার্যকর হবে সে বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি তিনি।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ বলেছিলেন, অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসীদের সংখ্যাকে সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে আনতে হবে। সে সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন ব্যবস্থাকে ভাঙাচোরা বলেও আখ্যা দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ায় মোট অভিবাসী প্রবেশ করেছে ৫ লাখ ১০ হাজার। অস্ট্রেলিয়া সরকার আশা করছে, নতুন পদক্ষেপের ফলে ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে এই সংখ্যা প্রায় এক-চতুর্থাংশে নেমে যাবে, যা কোভিড মহামারির ঠিক আগের সময়ের অভিবাসীর সংখ্যার কাছাকাছি।
এর আগে, ব্রিটেন সরকার দেশটির অভিবাসননীতি পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়। ব্রিটেন সরকার ঘোষিত সর্বশেষ নীতি অনুসারে, যেসব অভিবাসী এখন থেকে ব্রিটেনে যাবেন, তাঁদের অবশ্যই কোনো না কোনো নির্দিষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে। পাশাপাশি অভিবাসীদের জন্য সর্বনিম্ন আয়সীমাও বাড়ানো হয়েছে এক-তৃতীয়াংশ এবং এই পরিমাণ অর্থ আয় করতে হবে নির্দিষ্ট খাতের দক্ষ শ্রমিক হিসেবে। তবে দেশটির বণিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। কারণ, দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত স্বাস্থ্য খাত ও বেসরকারি খাত এখনো ব্যাপকভাবে শ্রমিকহীনতায় ভুগছে।