বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শক্তিশালী বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ভোটের বিষয়ে যেসব খবর প্রকাশ হয়েছে তার সময়োচিত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন ইইউর হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) জোসেপ বোরেল।
মঙ্গলবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর থেকে প্রচারিত এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত রোববার বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ৭ জানুয়ারি সংসদীয় নির্বাচনের ফলাফল নোটে নিয়েছে।
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন- অভিন্ন ৩ মূল্যবোধের ওপর ইইউ-বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠিত জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নির্বাচনে প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হতাশা ব্যক্ত করছে।
জোসেপ বোরেল বিবৃতিতে বলেন, ইইউ নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মিশনের আসন্ন প্রতিবেদন এবং সুপারিশগুলো প্রকাশ করার জন্য কর্তৃপক্ষগুলোর মধ্যে হওয়া চুক্তিকে স্বাগত জানায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির চেতনায়, আমরা নির্বাচনে অনিয়মের যেসব খবর এসেছে, সেগুলোর সময়োচিত ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্বাচনকালে সংঘটিত সমুদয় সহিংসতার নিন্দা জানায় ইইউ এবং নির্বাচনপরবর্তী সময়ে সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে সবপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। এই সময়কাল এবং এর পরবর্তী সময়ে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে বিরোধী নেতাকর্মীদের আটক অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ইইউ প্রতিনিধির বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক বহুত্ববাদ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং শান্তিপূর্ণ সংলাপে যুক্ত হওয়ার জন্য সব অংশীজনকে জোরালোভাবে উৎসাহিত করছে ইইউ।
গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো ধরনের সেন্সরশিপ বা প্রতিশোধের ভয় ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারার পরিবেশ থাকাটাও জরুরি। রাজনীতি, মানবাধিকার, বাণিজ্য ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক যেসব অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে, সেগুলো নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করবে ইইউ।
এর মধ্যে আগামীতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা জিএসপি প্লাসে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিও রয়েছে।