ভোট যেতেই বাড়ল গরুর মাংসের দাম


, আপডেট করা হয়েছে : 13-01-2024

ভোট যেতেই বাড়ল গরুর মাংসের দাম

ভরা মৌসুমেও কমছে না সবজির দাম। বেড়েছে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, আটা, ময়দাসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম। ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা খেয়ালখুশিমতো দাম বাড়াচ্ছেন।


গরুর মাংসের দাম কমিয়ে তুমুল আলোচনায় এসেছিলেন রাজধানীর শাহজাহানপুরের খলিল আহমেদ। কিন্তু নির্বাচন শেষ হতেই তিনি মাংসের দাম বাড়িয়েছেন কেজিতে ৬০ টাকা। নির্বাচনের আগে তিনি ৫৯০ টাকা কেজিতে মাংস বিক্রি করলেও গতকাল শুক্রবার বিক্রি করেছেন ৬৫০ টাকা দরে। আজ শনিবার সকাল থেকে এই দাম ৬৯০ টাকা হয়ে যাবে বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন খলিল।


৬৫০ টাকায় বিক্রি করেও দিনে লাখ টাকার ওপরে লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেন খলিল। এক সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে মাংসের দাম কেজিতে ৬০-১০০ টাকা বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন গরুর দাম বেশি। ভোটের আগে কম দামে গরু আনতে পারছি। তাই কমে বিক্রি করছি। ৮ দিনের ব্যবধানে গরুর দাম বেড়ে গেছে। ভোট কোনো বিষয় না। যদি দাম কমে, আমরাও দাম কমিয়ে দেব।’


গতকাল রাজধানীর মোহাম্মদপুর, বনানী, রামপুরা, মেরাদিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরেও দেখা যায়, ৬৫০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। মেরাদিয়ার মাংস বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত সপ্তাহে তিনি ৬৮০ টাকায় মাংস বিক্রি করেছেন। আর এই সপ্তাহে ৭০০ টাকায় বিক্রি করছেন।


দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে আনোয়ার বলেন, ‘৪ মণের গরু আগে ১ লাখ ২৫ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কেনা যেত। কিন্তু এখন ১ লাখ ৪০ হাজারের নিচে গরু মিলছে না। তাই দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি।’


গরুর মাংসের পথ ধরে বাজারে মাছ এবং মুরগির দামও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ১৯০-২০০ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে তা ২১০-২২০ টাকায় পৌঁছেছে। আর সোনালি জাতের মুরগি ৩২০-৩৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বনানী কাঁচাবাজারের শরীয়তপুর ব্রয়লার হাউসের বিক্রেতা মোহাম্মদ আজহার বলেন, শীতে মুরগির বাচ্চার আমদানি কম থাকে। তাই দামটা এখন একটু বেশি।


কয়েক দিনের ব্যবধানে বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার মাঝারি মানের সরু মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৬৮-৭২ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। মোটা চাল কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভোটের কারণে চালের গাড়ি কম এসেছে। সরবরাহ কম থাকায় চালের দাম বেড়েছে।


ভরা শীতেও সবজির দাম স্বাভাবিক নিয়মে কমছে না, বরং কিছু কিছু সবজির দাম ভোটের অজুহাতে বেড়েছে। গতকাল বাজার ঘুরে দেখা যায়, কাঁচা পেঁপে ও মুলা ছাড়া ৫০ টাকার নিচে বাজারে কোনো সবজি নেই। এই সবজি দুটি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ টাকা দরে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৫০ টাকা। লাউ ৮০-১০০ টাকা। শিম প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা, বেগুন ৬০-৯০ টাকা, বরবটি ৯০-১০০ টাকা, শসা ও টমেটো ৫৫-৬০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০ টাকা, আলু ৬০-৭০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। দেশি রসুন ৩০০ টাকা, আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৬০ টাকা এবং ভারত থেকে আমদানি করা আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।


রামপুরা বাজারে সবজি কিনতে আসা স্কুলশিক্ষক তাজুন্নাহার বলেন, ‘শীতের সময় সবজির দাম এত বেশি কেন থাকবে? শীতকালে ২০-২৫ টাকার বেশি দামে জীবনেও আলু কিনিনি। এখন ৬০ টাকা দিয়েও কিনতে হচ্ছে।’


রমজান আসার মাস দুয়েক আগেই বাজারে ছোলার ডালের দাম কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়ে গেছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও ছোলার কেজি ছিল ৮৫-৯০ টাকা। এখন তা ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালের দামও কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ১৫০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার