রাজশাহীতে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তিন তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহী মহানগর মতিহার থানা পুলিশ। রোববার বিকেলে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হলে তিন তরুণ ধর্ষক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। পরে আদালতের আদেশে ধর্ষকদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। গণধর্ষনের শিকার তরুণীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- রাজশাহী মহানগরের মতিহার থানার বুধপাড়া মহল্লার মতিউর রহমানের ছেলে আবু হুরায়রা রোহান (১৯), মনিরুল ইসলাম কেনেডির ছেলে মনোয়ার হোসেন মুন্না (২৭) ও আসাদুল ইসলামের ছেলে জুনায়েদ ইসলাম জুনায়েদ (২০)।
জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে নগরীর চন্দ্রিমা থানা এলাকার এক তরুণী রিকশাযোগে বিনোদপুরে তার খালার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় বধ্যভূমির কাছে রোহান ওই তরুণীর রিকশার গতিরাধে করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে। পরে তরুণীকে পার্শ্ববতী মটমটির বিলে নিয়ে যাওয়া হয়। রোহান সেখানে তরুণীকে একদফা ধর্ষণ করেন। পরে তরুণীকে আটকে রেখে তার দুই বন্ধু মুন্না ও জুনায়েদকে ফোন করে ডেকে নেন। পরে তরুণীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মতিহার থানার বুধবপাড়ার আরবি ফুড গ্যালারি নামের একটি বাগানঘেরা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোহান, মুন্না ও জুনায়েদ মিলে ওই তরুণীকে আবার পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এর পর তরুণীর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সেখানে আটকে রেখে আবারও তিন তরুণ রাতভর তরুণীকে ধর্ষণ করে।
ওই রাতেই তরুণীর মা চন্দ্রিমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন ১৩ জানুয়ারি দুপুর দুটার দিকে তরুণীকে ছেড়ে দেওয়া হলে সে পরিবারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে। পরিবারসহ এলাকার লোকজন মতিহার থানার বুধপাড়ার আরবি ফুড গ্যালারির সামনে থেকে তরুণীকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন। তরুণীর মা রাতে মতিহার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
এদিকে রোববার বিকেলে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আসামিদের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেলে আদালতে পাঠানো হলে তিনজন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
আরএমপির মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোবারক পারভেজ জানান, তরুণীকে অপহরণের পর তিন বন্ধু মিলে একাধিকবার ধর্ষণ করে। আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। এসআই মতিউর রহমান মামলাটি তদন্ত করছেন। দ্রুত সময়ে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে আদালতে। ওসি আরও জানান ভিকটিম সুস্থ হয়ে উঠলে তার জবানবন্দী অনুযায়ী এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে।