অবৈধ মজুদের শাস্তি আটকে আছে বিধিতে


, আপডেট করা হয়েছে : 28-01-2024

অবৈধ মজুদের শাস্তি আটকে আছে বিধিতে

খাদ্যপণ্যের অবৈধ মজুদ, উৎপাদন, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিপণন ও বিতরণে ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট আইন পাস হলেও বিধিমালা না থাকায় তা কার্যকর করতে পারছে না সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা মজুদ করছে। এতে করে খাদ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন আইনের চূড়ান্ত বিধিমালা ভেটিংয়ের অপেক্ষায় আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিরা। দুই সপ্তাহের মধ্যেই বিধিমালার গেজেট প্রকাশ করার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।


রমজানের আগে চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সামাল দিতে বর্তমানে কঠোর সরকার। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মজুদবিরোধী অভিযান ও জেল-জরিমানার ওপর জোর দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী। চালের বাজার ও দাম নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক পর্যবেক্ষক দল। কিন্তু আইন থাকার পরও বিধিমালা না থাকায় অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইনি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।



খাদ্যপণ্যের অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রনে সারাদেশে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে খাদ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তর বলছে, খাদ্যপণ্য সংক্রান্ত ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধের নিয়মিত অভিযানে ভোক্তা সংরক্ষণ আইন, কৃষি বিপণন আইনের আওতায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। তাদের মতে, নতুন আইন কার্যকর হলে খাদ্যপণ্যের অবৈধ মজুদসহ অন্যান্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আনা সহজ হবে।


এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আইনের সবকিছু চূড়ান্ত। এটি ভেটিং-এর অপেক্ষায় আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তাদের সাথে কথা হয়েছে, এটি দ্রুত সম্পন্ন করার ব্যাপারে। আশা করছি দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা গেজেট প্রকাশ করতে পারব।


জানা যায়, গত বছরের জুলাই মাসে জাতীয় সংসদে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিল-২০২৩’ পাস হয়। মূলত ১৯৫৬ সালের ফুড (স্পেশাল কোর্ট) অ্যাক্ট এবং ১৯৭৯ সালের ফুড গ্রেইনস সাপ্লাই (প্রিভেনশন অব প্রিজুডিশিয়াল অ্যাকটিভিটি) অর্ডিন্যান্স বাতিল করে নতুন এ আইন করা হয়। নতুন আইনে সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুদ করলে যাবজ্জীবন বা সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়।


বিলে বলা হয়, খাদ্যদ্রব্য বলতে বোঝাবে যে কোনো ধরনের দানাদার খাদ্যদ্রব্য; যথা— চাল, ধান, গম, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি। বিলে আরও বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো ধরনের লাভের উদ্দেশ্য ছাড়া মজুদ করেছিলেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। তবে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এখনো নতুন এই আইনের বিধিমালা হয়নি।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার