ঢাকায় এবার হচ্ছে ইন্টারচেঞ্জ মেট্রোরেল


, আপডেট করা হয়েছে : 30-01-2024

ঢাকায় এবার হচ্ছে ইন্টারচেঞ্জ মেট্রোরেল

ঢাকায় এবার আসছে ‘ইন্টারচেঞ্জ মেট্রোরেল’। এই ট্রেন ব্যবহার করে পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ মিরপুরে এসে সহজেই উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করতে পারবে। উড়াল-পাতাল রেলপথে নির্মিত হচ্ছে দেশের তৃতীয় এই মেট্রোরেল। প্রতিদিন প্রায় ১২ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী এই ট্রেনে পরিবহন করা যাবে বলে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কর্মকর্তারা জানান। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।


প্রকল্প সূত্র জানায়, তৃতীয় মেট্রোরেল ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫ নর্দার্ন রুটের সঙ্গে এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-৬ ও এমআরটি লাইন-৫ এর সাউদার্ন রুট- এই তিনটি মেট্রোরেলের সংযোগ থাকবে। রাজধানীর সাভারের হেমায়েতপুরে এই মেট্রোরেলের ডিপো নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বছর ৪ নভেম্বর এমআরটি-৫ নর্দার্ন রুটের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজ শেষ হবে। উড়াল ও পাতাল পথের সমন্বয়ে এটি হবে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ।


তিন অংশে এই রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে প্রথম অংশ সাভারের হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত পাঁচ দশমিক ছয় কিলোমিটার হবে উড়াল। এই অংশে মেট্রোস্টেশন হবে চারটি। এগুলো হলো- হেমায়েতপুর, বলিয়ারপুর, বিলামালিয়া (মধুমতি) ও আমিনবাজার। দ্বিতীয় অংশে আমিনবাজারের কিছুদূর পরে গাবতলী থেকে গুলশান নতুনবাজার পর্যন্ত ১৩ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার অংশ হবে পাতাল। এই অংশে স্টেশন হবে নয়টি। এগুলোÑ গাবতলী, দারুস সালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২ ও নতুনবাজার। তৃতীয় অংশে নতুন বাজারের পর থেকে ভাটারা পর্যন্ত আবার উড়ালপথে এই অংশটি নির্মাণ করা হবে। এই অংশে শুধু ভাটারা স্টেশনটি উড়ালপথে নির্মাণ করা হবে।


আন্তঃলাইন সংযোগ মেট্রোরেল ॥ এই মেট্রোরেল নির্মাণ শেষ হলে প্রতিদিন প্রায় ১২ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে। মেট্রোরেল-৫ নর্দার্ন রুটের সঙ্গে অন্যান্য মেট্রোরেলের আন্তঃলাইনের সংযোগ থাকবে। এর মধ্যে গাবতলী স্টেশনে এমআরটি লাইন-৫ সাউদার্ন রুটের সংযোগ থাকবে। তাই রাজধানীর ধানমন্ডির কোনো যাত্রী যদি গুলশান যেতে চায়, তাহলে এমআরটি-৫ এর সাউদার্ন রুটের পাতাল মেট্রোরেল ব্যবহার করে গাবতলী স্টেশন এমআরটি-৫ এর নর্দার্ন রুটে গুলশান যেতে পারবে।


এ ছাড়া এমআরটি-৫ এর নর্দার্ন পাতাল রুটের সঙ্গে মিরপুর-১০ স্টেশনে এমআরটি-৬ এর উড়াল রুটের সংযোগ থাকবে। এ ক্ষেত্রে উড়াল মেট্রোস্টেশন মিরপুর-১০ থেকে পাতাল মেট্রোস্টেশন মিরপুর-১০ যাত্রীদের ওঠা-নামার চলন্ত সিঁড়ি ও লিফটের সুবিধা থাকবে। উড়াল-পাতাল মিরপুর-১০ মেট্রোস্টেশন ব্যবহার করে যে কোনো যাত্রী গাবতলী থেকে মতিঝিল এবং উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে গাবতলী ও গুলশানে যাতায়াত করতে পারবে। পাশাপাশি এমআরটি-৫ এর নর্দার্ন পাতাল রুটের নতুনবাজার স্টেশনের সঙ্গে এমআরটি-১ এর পাতাল রুটের সংযোগ থাকবে। তাই নতুনবাজার পাতাল মেট্রোস্টেশন ব্যবহার করে যে কোনো যাত্রী মিরপুর, গাবতলী, ধানমন্ডি ও পূর্বাচলে যাতায়াত করতে পারবে বলে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান।


এমআরটি-৫ এর নর্দার্ন রুটের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক (সিভিল, আন্ডারগ্রাউন্ড) ড. মো. মশিউর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘উড়াল ও পাতাল রেলপথের সমন্বয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের তৃতীয় মেট্রোরেল ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫ নর্দার্ন রুট। এই মেট্রোরেলের সঙ্গে এমআরটি লাইন-১, এমআরটি লাইন-৬ ও এমআরটি লাইন-৫ এর সাউদার্ন রুটÑ এই তিনটি মেট্রোরেলের সংযোগ থাকবে। এই মেট্রোরেলের পাতাল রুটের গাবতলী, মিরপুর-১০ ও নতুনবাজারÑ এই তিনটি স্টেশন ব্যবহার করে যে কোনো যাত্রী তিনটি মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবে। গাবতলী ও নতুনবাজার পাতাল মেট্রোরেল স্টেশনের সঙ্গে এমআরটি লাইন-৫ এর সাউদার্ন পাতাল রুট এবং এমআরটি-১ এর পাতাল রুট যুক্ত থাকবে। এ ছাড়া এই মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ পাতাল স্টেশনের সঙ্গে এমআরটি-৬ এর উড়াল মিরপুর-১০ স্টেশন যুক্ত করা হবে।’ এ ক্ষেত্রে মিরপর-১০ এর উড়াল ও পাতাল স্টেশনে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য লিফট ও চলন্ত সিঁড়ির সুবিধা থাকবে বলে জানান তিনি।


ব্যয় হবে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ॥ ডিএমটিসিএলের সূত্র জানায়, এই মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৮ সালে। এই মেট্রোরেল নির্মাণে ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা শেষ হয়েছে। ডিটেইল ডিজাইনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের ১১ দশমিক ১০০ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার