একক মাসে রেকর্ড ৫৭২ কোটি ডলার আয়ে প্রবৃদ্ধির ধারায় রপ্তানি


, আপডেট করা হয়েছে : 06-02-2024

একক মাসে রেকর্ড ৫৭২ কোটি ডলার আয়ে প্রবৃদ্ধির ধারায় রপ্তানি

টানা তিন মাস কমে যাওয়ার পর জানুয়ারিতে একক মাসে রেকর্ড গড়ে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে রপ্তানি আয়। সদ্য সমাপ্ত মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি।

আগের মাস ডিসেম্বরেও একক মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছিল। ওই মাসে ৫৩৬ কোটি ৫১ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা এতদিন পর্যন্ত এক মাসের সর্বোচ্চ রপ্তানি আয়। এক মাস পর জানুয়ারিতেই তা ছাপিয়ে গেল।


তবে রোববার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্য থেকে দেখা গেছে, ডিসেম্বরের মতো জানুয়ারিতেও একক মাসের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। রেকর্ড আয় এলেও সবশেষ এ দুই মাসেই লক্ষ্যমাত্রার থেকে পিছিয়ে ছিল রপ্তানি। গত জানুয়ারিতে ৫৭৬ কোটি ৪০ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রা থেকে শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে একক মাসের আয়। ডিসেম্বরে রপ্তানির অর্জন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ০৩ শতাংশ পিছিয়ে ছিল।


 


চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সপ্তম মাস জানুয়ারিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৮ কোটি ডলার বেড়ে হয়েছে ৫৭২ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের জানুয়ারিতে যা ছিল ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।


সদ্য সমাপ্ত জানুয়ারির রেকর্ড আয়ে ভর করে সাত মাসের রপ্তানি আয়েও প্রবৃদ্ধি শূন্যের ঘর পেরিয়ে আড়াই শতাংশ ছাড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এ সময়ে ৩ হাজার ৩২৬ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল প্রায় ৩ হাজার ২৪৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে সার্বিক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৫২ শতাংশ, ডিসেম্বর শেষে ছয় মাসে যা ছিল শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ।


তবে সাত মাসে সরকার রপ্তানির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সেটি পূরণ হয়নি। গত জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে ৩ হাজার ৫৮৮ কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় কম হয়েছে প্রায় দশমিক ৬৯ শতাংশ।


চলতি অর্থবছরে সরকার মোট ৬২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে। বিদেশি মুদ্রার প্রধান এ উৎস থেকে অর্থবছরের শুরুতে আয়ে ঊর্ধ্বমুখী ধারা থাকলেও অক্টোবর থেকে ধাক্কা খায় রপ্তানি। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত একক মাসগুলোতে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কমে যায় আয়।


বরাবরের মতো গত জানুয়ারিতে রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগ এসেছে তৈরি পোশাক থেকে। এ সময়ে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ, মোট আয় এসেছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৪২ কোটি ডলার। পোশাকের রপ্তানির ওপর ভর করে সার্বিক রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।


পোশাক খাতে শুধু জানুয়ারি মাসে আয় হয়েছে ৪৯৭ কোটি ডলার, যা আগে কখনও হয়নি।


 


এই সাত মাসে নিটওয়্যার পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় ১ হাজার ৬১৭ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি।


অন্যদিকে এ সময়ে কমেছে ওভেন পোশাক রপ্তানি। এ খাত থেকে আয় এসেছে ১ হাজার ২১৮ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের এই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ২০ শতাংশ কম।


তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “ওভেন পোশাকে আমরা আগের মতোই স্ট্রাগল করছি। নিটে কিছুটা বেড়েছে। তবে একটা ভালো বিষয় হচ্ছে, আমরা জানুয়ারিতে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার মতো আমরা রপ্তানি করেছি। যেটা আগে হয়নি।


“তবে এটা হয়েছে বিভিন্ন কারণে। বিভিন্ন দেশ তাদের ইকোনমির উন্নয়নে যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে কারণেই জানুয়ারিতে রপ্তানি বেড়েছে।”


জানুয়ারিতে পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এ রপ্তানিকারক মনে করছেন, বিশ্ব অর্থনীতি এখনও খুব ভালো করছে না। মোটের উপর এ বছর খুব একটা ভালো কিছু হবে না বলেই পূর্বাভাস মিলছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার