আফগানিস্তানে পাঁচ দশমিক নয় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাকতিকা মারাত্মকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক হাজার ও আহত হয়েছেন এক হাজার ৫০০। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অর্থ সহায়তা চেয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জানা গেছে, আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাকতিকা প্রদেশে জরুরি আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে জাতিসংঘ। তাছাড়া ভারি বৃষ্টি ও যন্ত্রের অভাবে উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
ভুক্তভোগী ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের আশপাশের গ্রামগুলো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে রাস্তা ও মোবাইলের টাওয়ার। আশঙ্কা করা হচ্ছে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা আব্দুল কাহার বলখি বলেছেন, আফগানিস্তান একটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। সরকার আর্থিকভাবে জনগণকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে সহায়তা করতে অক্ষম।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশসহ অনেকেই সাহায্য করছে। তবে এ সাহায্যের পরিমাণ কম। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আরও সাহায্যর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (২২ জুন) ভোররাতে মানুষজন ঘুমিয়ে থাকার সময় আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে আঘাত হানে প্রবল এই ভূমিকম্প। পাকিস্তান আবহাওয়া অধিদপ্তরের ন্যাশনাল সিসমিক মনিটরিং সেন্টার এবং ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএমএসসি) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ১। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) অবশ্য ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ দশমিক ৯ রেকর্ড করেছে।
ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের খোস্ত শহরে এবং কেন্দ্র ভূপৃষ্ঠ থেকে ৪৪ কিলোমিটার গভীরে।
ইএমএসসি জানিয়েছে, প্রায় ৫০০ কিলোমিটার জায়গাজুড়ে এই ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে। এতে আফগানিস্তানের পাশাপাশি কেঁপে ওঠে প্রতিবেশী পাকিস্তান এবং ভারতও।
ভোররাতে ভূমিকম্পটি আঘাত হানায় সেসময় ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধসে পড়া বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান অনেকে।
আফগানিস্তান খুবই ভূমিকম্পপ্রবণ একটি দেশ। জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত ১০ বছরে দেশটিতে ভূমিকম্পে সাত হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভূমিকম্পে প্রতি বছর আফগানিস্তানে গড়ে ৫৬০ জন মারা যান ।