ডলার-টাকা অদলবদল সুবিধা চালু


, আপডেট করা হয়েছে : 16-02-2024

ডলার-টাকা অদলবদল সুবিধা চালু

টাকা-ডলার অদলবদল সুবিধা চালু করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কারেন্সি সোয়াপ বা টাকা-ডলার অদলবদল করতে পারবে। এ পদ্ধতিতে টাকা বা ডলার জমা রেখে ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে ব্যাংক। যে মুদ্রা নেওয়া হবে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সেই মুদ্রা ফেরত দিতে হবে। অদলবদলের জন্য নির্ধারিত সময়ের জন্য সুদ পাবে একটি পক্ষ। সুদহারের হিসাব হবে টাকা ও ডলারের নীতি সুদহারের সঙ্গে পার্থক্যের ভিত্তিতে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো অনেক দিন ধরে ডলার ও টাকার সংকটে ভুগছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোনো কোনো ব্যাংকের কাছে ডলার বেশি থাকলেও টাকার সংকট রয়েছে। আবার কারও কাছে নগদ অর্থ রয়েছে কিন্তু ডলার সংকট রয়েছে। এ রকম ক্ষেত্রে যার কাছে যে মুদ্রা থাকবে, সাময়িক সময়ের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারবে। তুলনামূলক কম সুদ ও সহজ শর্তে অদলবদল সুযোগের কারণে বাজারে তারল্য সংকট কমতে পারে। বাংলাদেশ

ব্যাংক বলছে, স্থানীয় মুদ্রাবাজার গতিশীল করতে অদলবদল পদ্ধতি চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মাধ্যমে ডলার বা যে কোনো স্বীকৃত বৈদেশিক মুদ্রা জমা রেখে টাকা নেওয়া যাবে। আবার টাকা জমা রেখে ডলার বা অন্য স্বীকৃত মুদ্রা নেওয়া যাবে। সোয়াপের ক্ষেত্রে ওই দিনের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারভিত্তিক দর হিসাব করা হবে। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সোয়াপে কোনো সুদ আরোপ হবে না। তবে প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ক্ষেত্রে টাকার নীতি সুদহার রেপো এবং ডলারের বেঞ্চমার্ক রেট সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেটের (এসওএফআর) মধ্যে যে পার্থক্য থাকবে সে পরিমাণ সুদ পাবে। উদাহরণ হিসেবে ধরা যাক, বর্তমানে রেপোর সুদহার রয়েছে ৮ শতাংশ। আর ডলারের ৯০ দিন মেয়াদি বেঞ্চমার্ক রেট এসওএফআর ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর মানে ডলারের বেঞ্চমার্ক রেটের চেয়ে নীতি সুদহার বেশি তথা পার্থক্য আছে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর মানে এখন যদি কোনো ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রেখে ডলার নেয় তাহলে নির্ধারিত মেয়াদ শেষে মূল টাকার সঙ্গে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ সুদ যোগ করে ফেরত দিতে হবে। একইভাবে কোনো ব্যাংক যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ডলার রেখে টাকা নেয় তাহলে ওই ব্যাংক পাবে ২ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে কারেন্সি সোয়ারে মাধ্যমে সর্বনিম্ন ৫০ লাখ (৫ মিলিয়ন) ডলার বা তার সমপরিমাণ টাকা অদলবদল করা যাবে। তবে এর বেশি নিতে চাইলে কমপক্ষে ১ মিলিয়ন করে বাড়তি নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ বা সাড়ে ৬ মিলিয়ন নেওয়া যাবে না। অদলবদলের মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন ৭ থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন। তবে ব্যাংক চাইলে রোলওভার করতে পারবে।

মুদ্রা অদলবদলের সুবিধা নিতে হলে আগ্রহী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তি হবে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার জমা দেবে, ওই দিনের ডলারের বিনিময় মূল্য হিসেবে সমপরিমাণ টাকা পেয়ে যাবে। একইভাবে নির্ধারিত সময় পর টাকা জমা দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার