ভারত সীমান্তে চালু হচ্ছে আরেকটি স্থলবন্দর


, আপডেট করা হয়েছে : 22-02-2024

ভারত সীমান্তে চালু হচ্ছে আরেকটি স্থলবন্দর

‘আমাদের সীমান্তের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দেব না’


সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তে ত্রিপুরার সাব্রুমে অত্যাধুনিক একটি আইসিপি বা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের উদ্বোধন হতে চলেছে। দিল্লিতে শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা বাংলা ট্রিবিউনকে আভাস দিয়েছেন, ভারত ও বাংলাদেশের দুই প্রধানমন্ত্রী, নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা সে দিন সকালে ভার্চুয়ালি এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। 


আইসিপি হলো আন্তর্জাতিক সীমান্তে অবস্থিত একটি আধুনিক টার্মিনাল ও লজিস্টিক হাব, যেখানে দুটো দেশের মধ্যে পণ্য বা যাত্রী চলাচলের সব ধরনের ব্যবস্থা থাকে। অর্থাৎ কার্যত এক ছাদের নিচে সেখানে শুল্ক (কাস্টমস), ইমিগ্রেশন থেকে শুরু করে কন্টেইনার ট্রান্সশিপমেন্ট, ওয়্যারহাউস (গুদাম) ইত্যাদি সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়, যাতে দুটো দেশের মধ্যে সেই পথে অবাধে বাণিজ্য ও যাতায়াত সম্ভব হতে পারে।


এই ‘আইসিপি’ চালু হওয়ার অর্থ হলো, সীমান্তবর্তী শহর সাব্রুমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আরও একটি আধুনিক স্থলবন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়া। এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় আইসিপি রয়েছে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আগামী দিনে সাব্রুম-রামগড়ে বাণিজ্য ও যাত্রী চলাচলের পরিমাণ তাকেও ছাড়িয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।




এর অবশ্য নির্দিষ্ট কিছু কারণও রয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী তথা বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে সাব্রুমের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটারেরও কম। বাংলাদেশে নির্মাণাধীন মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর থেকেও সাব্রুম ১০০ কিলোমিটারের মধ্যেই। চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি ভারত অনেক আগেই পেয়েছে। ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য চলাচলের জন্য সাব্রুম অচিরেই প্রধান ‘গেটওয়ে’ বা প্রবেশপথ হয়ে উঠবে এই সম্ভাবনা প্রবল। বছর তিনেকের মধ্যে মাতারবাড়ী চালু হয়ে গেলে সাব্রুম দিয়ে ‘ট্র্যাফিক’ যথারীতি আরও বাড়বে।


 


তাছাড়া সাব্রুমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ফেনী নদীর ওপর ১.৯ কিলোমিটার লম্বা মৈত্রী সেতুও তৈরি হয়ে আছে। ২০২১ সালের ২১ মার্চ নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনা যৌথভাবে এই সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু আইসিপি তখন প্রস্তুত না-থাকায় এই সেতুটির ব্যবহার এখনও সেভাবে শুরু করা যায়নি। এখন আইসিপি চালু হলে এই মৈত্রী সেতুতে ব্যস্ততাও অনেক বাড়বে।


সাব্রুম অবধি রেলপথও চালু হয়ে গেছে, যে স্টেশনের সঙ্গে ব্রডগেজে বাকি ভারতের রেল সংযোগও তৈরি। সোজা কথায়, এই মুহূর্তে সাব্রুমে শুধু আইসিপি চালু হওয়ার অপেক্ষা– যেটা হলে ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও মানুষে মানুষে আদানপ্রদানের (পিপল টু পিপল কনট্যাক্ট) ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের যে সংস্থা স্থল বন্দরগুলোর কার্যক্রম তদারকি করে থাকে, সেই ল্যান্ড পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার  (এলপিএআই) চেয়ারম্যান আদিত্য মিশ্রা গত মাসেই আইসিপি-র কাজ কতদূর, সরেজমিনে তা দেখতে সাব্রুম পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে ওই সফরে মন্ত্রণালয়ের সচিব বিবেক বর্মা, ত্রিপুরায় বিএসএফের মহানির্দেশক পীযূষ প্যাটেল-সহ শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার