রাজশাহীর বাঘায় লাউ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। বিক্রি করতে না পেরে হাট থেকে ফেরত নিয়ে গেলেন। আবার কেউ কেউ হাটে ফেলে রেখে চলে গেছেন। এমন ঘটনা ঘটেছে শনিবার (১৬ মার্চ) আড়ানী হাটে।
জানা যায়, আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের গোচর মহল্লার মৃত আমির আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান এক বিঘা জমিতে লাউ এর আবাদ করেছেন। তার এ লাউ চাষ করতে সার, বীজ, সেচ, লেবার, মাচা তৈরী সহ খরচ হয়েছে ৪৮ হাজার টাকা। প্রথমের দিকে তিনি প্রতি পিচ দেড়-দুই কেজি ওজনের একটি লাউ বিক্রি করেছেন ৪০-৪৫ টাকায়। মাঝামাঝি সময়ে বিক্রি করেছেন ২৫-৩৫ টাকা প্রতি পিচ।
শেষ সময়ে ৫-১০ টাকা বিক্রি করেছেন। কিন্তু শনিবার হাটে কোন ক্রেতা না পাওয়ায় বিক্রি করতে না পেরে ফেরত নিয়ে গেছেন। তিনি শনিবার জমি থেকে ১৬০টি লাউ তুলেছিলেন। লাউ তুলতে লেবার খরব হয় ১৬০ টাকা। বাড়ি থেকে আড়ানী হাটে আনতে খরচ হয়েছে ১০০ টাকা। বিক্রি করতে না পেরে বাড়িতে ফেরত নিয়ে যেতে খরচ হয়েছে ১০০ টাকা। তার মোট খরচ হয়ে ৩৬০ টাকা। বাড়িতে টাকা না থাকায় পরে হলুদ বিক্রি করে লেবার ও ভ্যানের খরচ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, আমার জমিতে এখনো ৪০০ পিচ লাউ ঝুলে আছে। এগুলো না তুললে প্রায় ২৪ হাজার টাকা মাচা ভেঙ্গে যাবে।
এ দিকে গোচর গ্রামের লাউ চাষি জহুরুল ইসলাম সোনা বলেন, আমি খুব সকালে এসে এক ব্যক্তিকে ৬০টি লাউ দিয়েছি। কত টাকা দিবে কিছুই জানিনা। জমিতে কিছু লাউ রয়েছে। এগুলো বিক্রি করতে পারছিনা।
এদিকে আড়ানী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কউন্সিলর জিল্লুর রহমান জমি থেকে ৭০টি লাউ তুলে হাটে আনেন। এ লাউ বিক্রি করতে না পেরে কুশাবাড়িয়া গ্রামের খুরচা সবজি ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম কাটুকে দিয়েছেন। বিক্রি করতে পারলে টাকা দিবে আর বিক্রি করতে না পারলে দিবেনা। এতে তার কোন দাবি নেই।
কুশাবাড়িয়া গ্রামের পাইকারী ক্রেতা আলান উদ্দিন বলেন, শনিবার হাটে লাউ কেনার কোন ক্রেতা ছিলনা। বাসুদেবপুর গ্রামের সেন্টু আলী ৫০০ লাউ নিয়ে আমার আড়তে আসেন। আমি কোন লাউ কিনি নাই। তাই তিনি আড়তে লাউ রেখে চলে যান। পরে মানুষকে ফ্রি দিয়েছি। এছাড়া গত মঙ্গলবার আড়ানী হাটে প্রতি পিচ সাড়ে ৬ টাকা গড়ে এক হাজার লাউ কিনেছিলাম। সেই লাউ ঢাকায় নিয়ে তিন দিন যাবত বিক্রি করে ৪ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। তাই আমি শনিবার হাটে লাউ কিনি নাই।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, উপজেলায় ৭৮ হেক্টর জমিতে লাউ চাষ হয়েছে। এ সময় শীত কমে যাওয়ার কারনে লাউ এর চাহিদা কমে যায়। তবে এলাকায় প্রচুর পরিমানে লাউ এর উৎপাদন হয়েছে।