উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সরকারের আরেকটা ‘ভোটচুরির ভাওতাবাজি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নৌকাকে ডুবিয়ে দিয়ে উপজেলা নির্বাচনে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘আওয়ামী লীগের নৌকা থাকলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসবে না, এজন্য উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক তুলে দেওয়া হয়েছে’ বলে দাবি করেন আমির খসরু।
‘৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ৯৫ শতাংশ ভোটার না যাওয়া থেকে চলমান আন্দোলনের বিরোধী দলের রাজনৈতিক সফলতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৯৫ শতাংশ মানুষ ওই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যায়নি। এবার সেই চিন্তা থেকে সরকার ভোটারদের আনতে নতুন কৌশল নিয়েছে। এবার তারা চিন্তা করেছে যে, মানুষ নৌকাকে ভয় পায়, নৌকার কথা শুনলে বোধহয় ভোটকেন্দ্রে যাবে না। সেজন্য উপজেলা নির্বাচনে এবার দলীয় প্রতীক বাদ দিয়েছে। অথচ তারাই স্থানীয় সরকার আইন করেছে নৌকা দিয়ে অর্থাৎ দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করার জন্য। আইনটা কিন্তু বাতিল করেনি। আইন রেখে এখন নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে না। কারণ তারা দেখছে, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা যেখানে আছে তারা সেখানে নেই। তারা নৌকা বয়কট করেছে। তাই এই উপজেলা নির্বাচন আরেকটি ভাঁওতাবাজির নির্বাচন। ভোটচুরি প্রকল্পই তাদের ক্ষমতার উৎস। এই ভোটচুরির প্রকল্প তাদের ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থা করেছে।’
আমির খসরু বলেন, ‘তারা (সরকার) উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। যে দেশে ভোট নেই, সে দেশে ভোটে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। যেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সেখানে আবার কিসের ভোট? সুতরাং এই উপজেলা নির্বাচন দেশের মানুষকে একটা ধাপ্পাবাজির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা ভোটের নামে ভাঁওতাবাজি। এদেশে ভোট বলে কিছু নেই। একটা ভোটচুরি প্রকল্পের মাধ্যমে জাতিকে তারা (সরকার) জিম্মি করে রেখেছে।’
সরকারের সব ‘অপকর্মের’ বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর ‘ঐক্য অটুট’ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে আমির খসরু বলেন, ‘সুখবর হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ আজকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। যারা বিরোধী দলে আছি আমাদের ঐক্য অটুট আছে, বিএনপির ঐক্য অটুট আছে। এই ঐক্য ভাঙতে এমন নেই যে কিছু করেনি। টাকা-পয়সা, ভয়ভীতি, জেল-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতন সব কিছু দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ধানক্ষেতে ঘুমিয়েছে, বেড়িবাঁধে ঘুমিয়েছে কিন্তু আপস করেনি। বিরোধী দলের নেতারা কেউ আপস করেনি। আমরা ৩১ দফা ঐক্যবদ্ধভাবে দিয়েছি। এটা চলমান আন্দোলনের দফা। অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সাম্য-মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ইত্যাদি বিষয়ে এক হয়েছি। আমাদের আন্দোলন চলমান আছে।’
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির উদ্যোগে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশের দিনটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে এ আলোচনা সভা হয়। সভায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দাবি উপস্থাপন করেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।
শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারি পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির তানিয়া রব, মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, কে এম জাবির প্রমুখ।