এবার খোলাবাজারেও ডলারের দাম নির্ধারণ


, আপডেট করা হয়েছে : 13-05-2024

এবার খোলাবাজারেও ডলারের দাম নির্ধারণ

ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর এক কার্যদিবস পরই খোলাবাজারে ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আন্তঃব্যাংকে ওঠা সর্বোচ্চ দরের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১ টাকা যোগ করে ডলার বিক্রি করতে পারবেন মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ীরা। তবে ব্যবসায়ীদের ডলার ক্রয়ের দর উন্মুক্ত রাখা হয়েছে এই বাজারে।


এদিকে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও খোলাবাজারে ডলারের দামে অস্থিরতা কাটেনি। বেশির ভাগ মানি এক্সচেঞ্জে ১২০ টাকার বেশি দামে ডলার ডলার বিক্রি করতে দেখা গেছে। এই দাম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দামের চেয়ে দুই টাকা বেশি। অজানা আতঙ্কে কোনো কোনো মানি এক্সচেঞ্জ ডলার কেনাবেচা একপ্রকার বন্ধ রাখে। ব্যবসায়ীরা জানান, ‘ক্রলিং পেগ’ চালুর পর মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে ছদ্মবেশে অনেকেই ডলারের দাম জানতে আসছেন। এ কারণে তারাও সতর্কতা অবলম্বন করছেন।


গত বুধবার এক সার্কুলারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ‘ক্রলিং পেগ’ বিনিময় পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এখন থেকে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেনে এই দরের আশপাশে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। মূলত এই দর থেকে ১ টাকা কমে ডলার ক্রয় ও ১ টাকা বাড়িয়ে ডলার বিক্রি করতে পারবে ব্যাংকগুলো।


গত বৃহস্পতিবার থেকে এই দর কার্যকর হয়। তবে খোলাবাজারে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে কিনা সেটা নিয়ে সার্কুলারে কোনো কিছু স্পষ্ট না করায় মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো ডলারের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থির করে তোলেন। বৃহস্পতিবার একদিনে খোলাবাজারে প্রায় ৮ টাকা বেড়ে ডলারের দাম ওঠে প্রায় ১২৫ টাকা। এর পরই খোলাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে নজরদারি শুরু করা হয়। পাশাপাশি গতকালই মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বৈঠকে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।


যোগাযোগ করা হলে মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে সভাপতি এসএম জামান বলেন, ‘ক্রলিং পেগ পদ্ধতি’ চালুর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সার্কুলার জারি করে সেখানে মানি চেঞ্জাররা কী দামে ডলার কেনাবেচা করবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা ছিল না। তবে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে আমাদের ডলার বিক্রি করার দর কী হবে সেটি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আন্তঃব্যাংকের ডলার কেনাবেচার সর্বোচ্চ দরের সঙ্গে ১ টাকা যোগ করে মানি চেঞ্জারদের ডলার বিক্রি করতে হবে। তবে ক্রয়ের দর উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। কেউ চাইলে ১১৭ টাকার কমেও ডলার কিনতে পারবে। এটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত।


কিন্তু কেন্দ্রীয ব্যাংকের নির্ধারিত দর অনেক মানি চেঞ্জার ব্যবসায়ী মানছেন না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তটা পেয়েছি দুপুরের দিকে। এর আগে হয়তো কেউ বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করতে পারেন। দুপুরের পরও কেউ কেউ বেশি দামে ডলার বিক্রি করছেন- এমন প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, আমাদের সদস্য কোনো প্রতিষ্ঠানের এটা করার কথা নয়। তার পরও কারও বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে আমরা সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সুপারিশ করব।


জানা যায়, গতকাল আন্তঃব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দাম ওঠে ১১৭ টাকা ৫০ পয়সা। এর দরের সঙ্গে ১ টাকা যোগ করে মানি চেঞ্জারদের ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা। তবে গতকাল রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টনসহ বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানগুলো ডলার বিক্রির সর্বোচ্চ দর ১১৮ টাকা ৫০ পয়সা লিখে ঝুলিয়ে রাখলেও ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত। বেশি দামে ডলার বিক্রির কারণেই কেউ ডলার কিনতে আসলে কৌশলে তার পরিচয় আগে জানার চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার