দেশের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি লঞ্চ ও ফেরি ঘাটে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়। ওইসব ঘাটে যাত্রী হয়রানি এবং যাত্রী ও যানবাহন থেকে বাড়তি টোল আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদুল আজহায় নৌপথে যান চলাচল নিরাপদ করতে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। বৈঠকে ১৩ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ১১ দিন বালুবাহী নৌযান চলাচল বন্ধের সুপারিশ করা হয়। ঈদের আগের ৩ দিন থেকে পরের ৩ দিন পর্যন্ত মোট ৭ দিন ফেরিতে পশু ও পচনশীল পণ্যবাহী ছাড়া অন্য ট্রাক পারাপার বন্ধেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, নৌ পরিবহণ অধিদপ্তর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং লঞ্চ মালিক ও শ্রমিক নেতারা অংশ নেন। অনলাইনে বিভিন্ন জেলার ডিসি ও এসপিরাও এতে সংযুক্ত ছিলেন।
সভায় অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, বৈঠকের একপর্যায়ে বিভিন্ন ঘাটে যাত্রী হয়রানি, বাড়তি টোল আদায়, হকারদের তৎপরতাসহ নানা অভিযোগ ওঠে। মুন্সীগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার আওতাধীন বেশ কয়েকটি নদী বন্দর দিয়ে লঞ্চে উঠতে যাত্রীদের প্রবেশ ফি দিতে হয়। আবার লঞ্চে আসা যাত্রীদের টার্মিনাল থেকে বের হতেও টাকা দিতে হয়। অনেক লঞ্চ ঘাটে প্রবেশ ফি ৫ টাকা হলেও যাত্রীদের থেকে ১০-১৫ টাকা আদায় করা হয়।
পাটুরিয়া, দৌলতদিয়া, ভোলার ভেদুরিয়া, বরিশালের লাহারহাটসহ বেশ কয়েকটি ফেরি ঘাটে যানবাহন থেকে বাড়তি টোল নেওয়া হয়। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ঘাটে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি ইজারাদারদের বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার কর্মকর্তাদের ব্যবস্থা নিতে বলেন। সভা শেষে ব্রিফিংয়ে নৌপথে যাত্রী হয়রানি ও বাড়তি টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নৌপথে বিশৃঙ্খলা বা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায় এমন কিছু মানুষ আছে। মিটিংয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর সুপারিশ করেছি। যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাত্রী হয়রানি করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্ষা মৌসুম হওয়ায় এবার নৌপথে ঈদযাত্রা একটু ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী সবাইকে আবহাওয়া বার্তা সঠিকভাবে মেনে যাতায়াত করার আহ্বান জানান।
সভায় সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ঈদুল আজহার কারণে ১৩ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ১১ দিন বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ থাকবে। ঈদের আগের ৩ দিন ও পরের ৩ দিন মিলে ৭ দিন পশুবাহী ও পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিতে পারাপার হবে। ওই সময়ে ফেরিতে সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান পারাপার বন্ধ থাকবে। আগের মতোই কাজীরহাট ও পাটুরিয়াঘাটে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হবে। চাঁদপুরসহ কিছু রুটে বাড়ানো হবে লঞ্চের সংখ্যাও।