টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুফল পেতেই সবার আগে মার্কিন মুলুকে পাড়ি জমায় বাংলাদেশ দল। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে সেখানকার কন্ডিশন-উইকেটের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভালো প্রস্তুতির লক্ষ্য ছিল তাদের। কিন্তু বাস্তবতা বড় ভিন্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। র্যাঙ্কিংয়ের ১৯ নম্বর দলটির কাছে টানা দুই হারে ভালো প্রস্তুতির আশা ভেস্তে গেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দলের।
হিউস্টনে সিরিজ হারের পর টিভি স্ক্রিনে এক চিলতে দেখা গেছে বিমর্ষ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহ ও তাঁর সহকারীদের। ক্রিকেটারদের চোখমুখেও রাজ্যের হতাশা। নতুন ভেন্যু, নতুন প্রতিপক্ষ—প্রথম হারের পর এটা না হয় যুক্তি হিসেবে দাঁড় করানো গেল, কিন্তু পরশু দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে যেভাবে স্নায়ুর পরীক্ষা দিয়ে জিতল যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে সিরিজ হারের কী অজুহাত শান্তদের! আইসিসি সহযোগী একটা দলের কাছে এমন আত্মসমার্পণের কী ব্যাখ্যা দেবেন সাকিব আল হাসানরা!
বিশ্বকাপের আগে অশনিসংকেত ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন সাকিব। প্রস্তুতির ঘাটতি ও যুক্তরাষ্ট্রে সুযোগ-সুবিধার অভাবের কথা বললেন তিনি, ‘এটাকে যদি আমরা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সিরিজ ধরি, তাহলে অনুশীলন সুবিধাটা আরও বেশি হওয়ার দরকার ছিল। এক দিন ঠিকঠাক নেট সেশন হয়েছে। তাও ব্যাটাররা যতটুকু ব্যাটিং করা দরকার সেটা করতে পারেনি। এটা আদর্শ অনুশীলন বলা যায় না। এক দিন ছিল ঐচ্ছিক (অনুশীলন), সেখানে ব্যাটাররা সুযোগ নেয়নি (প্রথম ম্যাচের পরদিন)। দুটোকে দোষ দিতে পারেন। যে দিন সুযোগ ছিল, সে দিন কেন ব্যাটাররা এসে ব্যাটিং করল না! আবার এটাও বলতে পারেন, যেহেতু আমরা (বিশ্বকাপের) প্রস্তুতিমূলক সিরিজ হিসেবে নিয়েছিলাম, কেন আমরা এ সুবিধাগুলো নিতে পারলাম না।’
প্রথম ম্যাচ হারের পরদিন টেক্সাসের হিউস্টনে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা পরিদর্শনে গিয়েছিল বাংলাদেশ দলের একাংশ! এতে প্রতিপক্ষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব না দেওয়ারও প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। তাদের কাছে বাংলাদেশ টানা হারবে—এটা দলের ভাবনাতেই ছিল না বলে স্বীকার করে নিলেন সাকিব, ‘আমরা প্রত্যাশা করিনি। আমার ধারণা, কেউই ভাবেনি দুটি ম্যাচ হেরে যাব। অবশ্যই হতাশাজনক। যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে খেলেছে, তাদের কৃতিত্ব দিতেই হয়।’
কিন্তু টানা হারে দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতি কি বড় ধাক্কা খেল না! যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে দলের এমন পারফরম্যান্সের প্রভাব বিশ্বকাপেও পড়তে পারে বলে মনে করেন সাকিব, ‘অবশ্যই পড়তে পারে। আবার নাও পড়তে পারে।’ তবে সাকিব আল হাসান এই দুই পরাজয়কে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস ও নেপাল ম্যাচের আগে একটা সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখছেন। সাকিবের ভাষায়, ‘টি-টোয়েন্টিতে ছোট বা বড় বলতে কোনো দল নেই। এ জন্য এই সংস্করণ সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর। এর প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গত দুই ম্যাচে দেখলাম। সামনে বিশ্বকাপ খেলতে হবে। এই সিরিজ বিশ্বকাপের আগে আমাদের জেগে ওঠার বার্তা।’