আত্মগোপনে’ বেনজীর আহমেদ পরিবার


, আপডেট করা হয়েছে : 31-05-2024

আত্মগোপনে’ বেনজীর আহমেদ পরিবার

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। গুলশানের র‌্যাংকন আইকন টাওয়ারের বাসাতেও নেই তারা। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসেও যাতায়াত নেই। দুদকের তলবি নোটিশও সরাসরি তাদের হাতে পৌঁছাতে পারেনি অনুসন্ধান টিম।

নোটিশ দেওয়া হয়েছে তার অফিসে কর্মরত এক কর্মীর হাতে। এ অবস্থায় তাদের অবস্থান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজাল। তারা এখন কোথায় আছে-তা নিশ্চিত করতে পারছেন না দুদক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ। তাদের এ ‘আত্মগোপন’ রহস্যের সৃষ্টি করছে। তার ঘনিষ্ঠদের দাবি, স্ত্রীর চিকিৎসাজনিত কারণে পরিবার নিয়ে বিদেশে অবস্থান করছেন বেনজীর।

তবে তার দেশত্যাগের বিষয়টি সরকারি কোনো সূত্র নিশ্চিত করেনি। পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, তিনি দেশেই আছেন। সামাজিক লোকলজ্জার ভয়ে পরিবারের কেউ প্রকাশ্যে আসছেন না। ৬ ও ৯ জুন বেনজীর ও তার স্ত্রী-সন্তানদের দুদকে হাজিরার দিন ধার্য আছে। আর বেনজীর পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।

দেশ-বিদেশে বেনজীরের সম্পদের অনুসন্ধান করতে গিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের বিস্ময় বাড়ছে। নতুন করে তার নামে-বেনামে আরও কয়েকশ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। স্ত্রী-সন্তানদের পাশাপাশি শাশুড়ি ও স্বজনদের নামেও তিনি গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। নতুন করে যেসব সম্পদের তথ্য দুদকের হাতে এসেছে তার মধ্যে আছে-অন্তত তিনটি লাইটারেজ জাহাজ, পঞ্চগড়ে বিশাল চা বাগান, বাংলাবান্ধা পোর্ট এলাকায় জায়গা-জমি, গাজীপুর এবং থানচিতে রিসোর্ট ও গাজীপুরে একটি টেক্সটাইল মিল। এসব সম্পদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। মালিকানায় বেনজীর পরিবারের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পরই পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে, বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের বিদেশে সম্পদ আছে কিনা তা জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে আমেরিকা, কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাইয়ের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই তিনটি দেশে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের কোনো ব্যাংক হিসাব, নিবন্ধিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আছে কিনা-তা জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে। আর দেশের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আগেই অন্তত বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা তুলে নিয়েছেন বেনজীর। সরিয়ে নেওয়া টাকার অঙ্ক অন্তত ১০০ কোটি বলে জানা গেছে। দুদকও অ্যাকাউন্ট থেকে তার টাকা সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে উল্লিখিত তথ্য জানা গেছে।

নির্দেশনা অনুসরণ করে আমাদেএ বিষয়ে দুদক কমিশনার (তদন্ত) বহুরুল হক বলেন, আইন ও বিধি অনুসারে যা যা করা দরকার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেনজীর পরিবারের স্থাবর-অস্থাবর বিপুল সম্পদ ক্রোক ও অবরুদ্ধ করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি হিসাব ফ্রিজ করার আগেই টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। কত টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন তা অনুসন্ধান কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখবেন। তিনি আরও বলেন, ‘অনুসন্ধান কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করছেন। হাইকোর্টের র টিম কাজ করছে। অল্প সময়ে আমরা অনেক এগিয়েছি।’ ২৬ ও ২৭ মে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক ও ফ্রিজ করেন আদালত।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার