সব মন্ত্রণালয়ে থাকবে মনিটরিং অনুবিভাগ


, আপডেট করা হয়েছে : 03-06-2024

সব মন্ত্রণালয়ে থাকবে মনিটরিং অনুবিভাগ

নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে সংশোধন করা হচ্ছে বাংলাদেশ সচিবালয় নির্দেশিকা। সচিবালয় নির্দেশমালা ২০১৪-এর কিছু ধারায় সংশোধন এনে নতুন নির্দেশমালা চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সচিবালয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে একটি করে মনিটরিং ও মূল্যায়ন অনুবিভাগ থাকবে। এই অনুবিভাগের কাজ হবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বিধিবিধান মেনে যথাযথভাবে কাজ করছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করা এবং কেউ অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা করছে কিনা, তা দেখভাল করা। এ বিধির আলোকে কোনো মতামত পাওয়া গেলে তা সরকারকে বিবেচনায় আনতে হবে।


নির্দেশমালায় নতুন যুক্ত করা হচ্ছে শাখা পরিদর্শনের বিষয়টি। বর্তমান নির্দেশমালায় পরিদর্শনের কথা বলা থাকলেও এর কোনো প্রমিত নমুনা নেই। এবার নমুনা সংযোজন করা হচ্ছে। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক নোটিং, ই-ফাইলিং ও ইলেকট্রনিক স্বাক্ষর পুরোপুরি চালু না হওয়া পর্যন্ত নোটিশ, সার্কুলার ও চিঠির কপি সাধারণ ডাকের পাশাপাশি ই-মেইলে পাঠাতে হবে। প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিন্ন ডোমেইনভুক্ত ই-মেইল অ্যাকাউন্ট থাকবে। মূল্যায়ন অনুবিভাগ সব বিষয় উল্লেখ করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবকে ত্রৈমাসিক ও বার্ষিক রিপোর্ট দেবে। এ অনুবিভাগ গোপনে অভিযোগ গ্রহণ ও অনুসন্ধান করতে পারবে। অনুবিভাগে একজন যুগ্ম সচিব অথবা উপসচিবের নেতৃত্বে কাজ হবে। এ বিষয়টিও সচিবালয় নির্দেশমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। নাগরিক সেবাদানে সচিবালয়ের নির্দেশমালা সব ক্ষেত্রে অনুসরণ নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।


আজ রোববার প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। সভায় ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের পক্ষ থেকে নাম ও পদসৃজন এবং নিয়োগ বিধিমালার সংশোধনের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।

বর্তমানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য পাঠানো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রস্তাবগুলোর সারসংক্ষেপের কোনো ‘বিশেষ নমুনা’ সচিবালয় নির্দেশিকায় নেই। তাই বিবেচনার জন্য পাঠানো সারসংক্ষেপ নিয়ে অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার জন্য সারসংক্ষেপের প্রমিত একটি নমুনা নির্দেশিকায় সংযোজন করা হচ্ছে। 

জানা গেছে, কর্মকর্তাদের দাপ্তরিক নেমপ্লেটে এতদিন শুধু ‘সচিব’ লেখা থাকত। এখন ‘সচিব’ ও ‘সিনিয়র সচিব’ লেখা যুক্ত হবে। একসময় দাপ্তরিক কাজে ব্যাপকভাবে ফ্যাক্সের ব্যবহারের প্রচলন থাকলেও এখন তা অনেকটা অপ্রাসঙ্গিক। বাংলা বা ইংরেজি ফ্যাক্স বাদ যাবে সচিবালয় নির্দেশমালা থেকে।


দাপ্তরিক কাজে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, ডেটা এন্ট্রি অপারেটর ও অফিস সহায়কদের ছুটি দিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তার সুপারিশ নিতে হবে। অফিস সহায়কদের পদোন্নতি বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন-এসিআরের আওতায় আনা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে নতুন এসিআর ফরম তৈরি করে তা সচিবালয় নির্দেশমালায় সংযোজন করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সচিবালয় নির্দেশিকা সচিবালয়ের বাইরে সব দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দপ্তরে অনুসরণ করা হয়। এ নির্দেশমালার নামও পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন নাম হিসেবে ‘সচিবালয় ও সরকারি অফিস কার্যনির্দেশিকা’ অথবা ‘প্রশাসনিক তথা দাপ্তরিক নির্দেশিকা’ প্রস্তাব করা হয়েছে।


বিশেষ প্রয়োজন বা পরিস্থিতিতে বাসায় বসে কাজের সুবিধা কর্মকর্তাদের মতো স্টেনোটাইপিস্ট, অফিস সহকারী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও রাখা হচ্ছে। তারা যেন বাসায় বসে দাপ্তরিক কাজ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে তাদের ল্যাপটপসহ যাবতীয় সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি সচিবালয় নির্দেশমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার