দেশে ১৪৮টি গ্যাস কূপ খননের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে পেট্রোবাংলা। ২০২৮ সাল পর্যন্ত এসব কূপ খনন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার। এর মধ্যে ৪৮টি কূপের খননকাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে। বাকি ১০০টি কূপ ২০২৮ সালের মধ্যে খনন করা হবে। গতকাল গাজীপুর শহরের জয়দেবপুর কনভেনশন সেন্টারে পেট্রোবাংলার এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান।
জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘২০৪১ সাল পর্যন্ত সরকারি প্রেক্ষিত পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডিমান্ড ও সাপ্লাই তৈরি করেছি। অর্থাৎ ২০৪১ সাল পর্যন্ত গ্যাসের ডিমান্ড কত থাকবে এবং সাপ্লাই সক্ষমতা কত থাকবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। ডিমান্ডের ওপর নির্ভর করে সাপ্লাই সাইড কীভাবে বাড়াতে পারি, সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সাপ্লাই সাইট দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। প্রথমত, দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস নিয়ে আসা। দ্বিতীয়ত অবশিষ্ট এলএনজি নিয়ে আসা। দেশীয় উৎস থেকে গ্যাস আনার জন্য এখন আমরা ৪৮টি কূপ খনন করছি। ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ কূপগুলো খননের পর ২০২৬-২৮ সাল পর্যন্ত আরো ১০০টি কূপ খনন করার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০২৮-৪১ সালের পরিকল্পনা কিছুদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে। দেশীয় উৎস থেকে শিল্প-কারখানায় গ্যাস দেয়ার জন্য পেট্রোবাংলা কাজ করছে। এলএনজি আমদানির জন্য আমাদের দুটি টার্মিনাল ছিল। আরো দুটি টার্মিনাল চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এলএনজি আমদানির জন্য আরো চারটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ২০২৬ সালের পর থেকে যখন আমাদের টার্মিনাল যুক্ত হবে, তখন অধিক এলএনজি আমদানি করে শিল্পকারখানার চাহিদা পূরণ করতে পারব। ২০৩৫ সাল পর্যন্ত এলএনজি আমদানির যে অবকাঠামো, সেটার ব্যাপারে এক বছরের মধ্যে সব চুক্তি সম্পাদন হবে।
জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, ‘সরকারের অনুমোদন নিয়ে সমুদ্রের গ্যাসের জন্য আমরা টেন্ডার আহ্বান করেছি। আশা করি সেপ্টেম্বর বা চলতি বছরের শেষের দিকে কিংবা আগামী বছরের প্রথম দিকে অনুসন্ধানের জন্য আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিকে দায়িত্ব দিতে পারব। আমরা আশা করি, বঙ্গোপসাগরে বিপুল পরিমাণ তেল ও গ্যাস পাব এবং আমাদের সরবরাহ লাইনে গ্যাসের পরিমাণ বাড়বে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করি, যেখানে আমাদের প্রতি মুহূর্তে জবাবদিহি করতে হয়। যে কথাটা বলে গেলাম তা কার্যকর হলো না বা অন্য কোনো কথা বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম, তা হবে না। বিদ্যুতে আমাদের বিপুল পরিমাণ গ্যাস দিতে হবে। সার কারখানায় গ্যাস দিতে হয়। এগুলো সরকারের নীতিমালা। তবে আমরা প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করব গ্রাহক যাতে ভালো থাকেন। তাদের সরবরাহ যেন নিশ্চিত হয়। তাদের ব্যবসা যেন বাড়ে। এর মাধ্যমে কর্মসৃজন করে দেশের উন্নতি করতে পারে।’
পেট্রোবাংলার পরিচালক (প্রশাসন) ও নৈতিকতা কমিটির সভাপতি একেএম মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান ও তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশিদ মোল্লাহ।