ওয়ানডে বিশ্বকাপে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে একা হাতে লড়াই করে আফগানদের জেতা ম্যাচ হারিয়ে দিয়েছিলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। টি-টোয়েন্টিতেও সেই শঙ্কা জাগিয়ে তুলছিলেন ম্যাক্সি। আফগান বোলিংয়ের বিপক্ষে বাকি অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটাররা যেখানে অসহায় আত্মসমর্পণ করছেন; সেখানে দলকে জয়ের পথ দেখাচ্ছিলেন তিনি। তবে এদিন গল্পের শেষটা দেখে আসতে পারেননি ম্যাক্সি। ইনিংসের ১৫ তম ওভারে দলীয় ১০৬ রানে ব্যক্তিগত ৪১ বলে ৫৯ রানের অনবদ্য এক ইনিংসের শেষ হয় ম্যাক্সির। সেই সঙ্গে শেষ হয় অজিদের জয়ের স্বপ্ন। ম্যাক্সিকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরা আফগানরা শেষমেশ বিশ্বমঞ্চে অজিদের বিপক্ষে পেয়ে যায় প্রথম জয়টা। তাও ২১ রানের ব্যবধানে। আর তাতেই সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা টিকে আছে তাদের। ঝুঁকিতে পড়ে গেছে অজিদের সেমিতে খেলা।
অথচ, এদিন টস হেরে শুরুতে ব্যাটিং করতে নামা আফগানরা ওপেনিং জুটিতে দলীয় শতরান পেরনোর পরেও দলীয় সংগ্রহটাকে পার করতে পারেনি দেড়শ। অজিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৬ উইকেটে ১৪৮ রানে থামে আফগানদের ইনিংস। সংগ্রহটা আহামরি না হলেও অজি স্পিনারদের দিকে তাকিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখেছিল আফগানরা। কেননা, নিজেদের বোলিং শক্তির ব্যাপারে বেশ ভালোই জানা আছে তাদের। সেই শক্তিই এবার অজিদের দেখিয়েছে দলটি। অজিদের অলআউট করে দিয়েছে ১২৭ রানে।
এদিন আফগানদের দেওয়া ১৪৮ রানের জবাবে অজিদের শুরুটা হয়েছে ভয়াবহ। রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট খুইয়ে বসে দলটি। শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেন ট্রাভিস হেড। এরপর আরও একবার হতাশ করে ৯ বলে ১২ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন মিচেল মার্শ। অধিনায়কের আউটের পর ৮ বলে ৩ রানে সাজঘরের পথ ধরতে হয় আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকেও। মার্কাস স্টয়নিসকে নিয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরান ম্যাক্সি। স্টয়নিস ১৭ বলে ১১ রান করে ফিরলে একই পথ ধরেন সদ্য উইকেটে নামা টিম ডেভিড। ফের পথ হারায় অজিরা। এরপরও ম্যাক্সি দলকে টানছিলেন এক হাতে। স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। তবে এদিন ম্যাক্সিকে নিজের শিকারে পরিণত করে অজিদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন দিনের সেরা বোলার গুলবাদিন নাইব।
ম্যাক্সি ৪১ বলে ৩ ছয় ও ৬ চারে ৫৯ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরার পর বাকিরা কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে। নেট রান রেট ঠিক রাখার চেষ্টা করেছে। জয়ের জন্য সেই অর্থে আগ্রাসী ব্যাট চালাতে দেখা যায়নি তাদের। এরপরও আফগানদের বিপক্ষে অজিদের হারের ব্যবধানটা ২১ রানের।
অজিদের বিপক্ষে এদিন শুরুটা বেশ ভালো করে আফগানরা। পাওয়ারপ্লেতে জমা করে ৪০ রান। এরপর এই জুটিতে ভর করেই ১৩.২ ওভারে দলীয় শত রান ছুঁই আফগানরা। স্বাভাবিকভাবেই তাই ভাবা হচ্ছিল শেষ দিকে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালিয়ে অজিদের বিপক্ষে বড় সংগ্রহ দাঁড় করাবে আফগানরা। তবে আফগান ব্যাটারদের সেটি হতে দেননি অজি বোলাররা। বাংলাদেশের পর এদিনও বল হাতে হ্যাটট্রিক তুলেছেন কামিন্স। ১৮ ওভারের শেষ বলে রশিদ খানকে আউট করার পর ২০তম ওভারের প্রথম দুই বলে আউট করেন করিম জানাত ও গুলবদিন নাইবকে।
তাতেই প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে টানা দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করার বিরল রেকর্ডে নাম লেখান তিনি। আর তাতেই বড় সংগ্রহের ভিত গড়েও শেষ পর্যন্ত সংগ্রহটাকে দেড়শও পার করতে পারেনি আফগানরা। তাদের ইনিংস থামে ৬ উইকেটে ১৪৮ রানে। যার মধ্যে ৪৯ বলে ৬০ রান এসেছে গুরবাজের ব্যাট থেকে ইব্রাহিম জাদরান করেছেন ৪৮ বলে ৫১ রান। যদিও শেষ পর্যন্ত এই পুঁজি নিয়েই অজিদের হারিয়ে দিয়েছে আফগানরা।