ছুটি ছাড়াই বিদেশে, নিয়মিত তুলে নিচ্ছেন বেতনভাতা


, আপডেট করা হয়েছে : 02-07-2024

ছুটি ছাড়াই বিদেশে, নিয়মিত তুলে নিচ্ছেন বেতনভাতা

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ২ সেবিকা (নার্স) ছুটি নিয়ে বিদেশে গিয়ে আর কর্মস্থলে ফেরেননি। বিধিবহির্ভূতভাবে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলেও তাদের নোটিশ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। উপরন্তু তারা মাসে মাসে বেতনভাতা তুলছেন হাসপাতাল থেকে। আলোচিত ২ সিনিয়র স্টাফ নার্স হলেন সাইমা ইয়াসমিন ও জাকিয়া সুলতানা। ২ নার্সের বিদেশে অবস্থান করার বিষয়ে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য থাকলেও রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রামেক হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইমা ইয়াসমিন ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর ছুটির আবেদন করেন। ওই বছরের ৯ থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত তাকে ১৪ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুর করা হয়। এরপর থেকে সাইমা আর কর্মস্থলে ফেরেননি। নতুন করে ছুটির আবেদনও করেননি। হাসপাতালের সেবিকা হাজিরা খাতার ২/১৭৩নং সিরিয়ালে আছে সাইমা ইয়াসমিনের নাম। হাজিরা খাতায়ও সাইমা ইয়াসমিন ২০২২ সালের ৯ নভেম্বর থেকে অনুপস্থিত আছেন। তবে অনুপস্থিত থাকলেও মাসে মাসে বেতনভাতা তুলেছেন তিনি। রামেক হাসপাতালের হিসাব বিভাগের তথ্যমতে, এক বছরে ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৬ টাকা বেতনভাতা নিয়েছেন এই সেবিকা।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ অক্টোবর ৪৫ দিনের অর্জিত ছুটি নিয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে বিদেশে যান সেবিকা জাকিয়া সুলতানা। এরপর থেকে তিনি আর কর্মস্থলে যোগ দেননি। ৮ মাস হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত জাকিয়া সুলতানা তুলেছেন ২ লাখ ৮২ হাজার ২৭৬ টাকা বেতনভাতা। অভিযোগ উঠেছে, রামেক হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে বিদেশে থেকেও নিয়মিত বেতনভাতা তুলছেন ২ সেবিকা। হাসপাতালের কয়েক সেবিকা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২ সিনিয়র স্টাফ নার্স দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন, এটা সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সেবিকাদের তত্ত্বাবধায়কের অগোচরে থাকার কথা নয়। তারা জেনেও দুই সেবিকার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত নার্সিং সুপারিনটেনডেন্ট পারভিন আক্তার বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। দুই নার্সের অনুপস্থিতির বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. হাসানুল হাছিব বলেন, কারও অনুপস্থিতিতে বেতন হওয়ার কথা নয়। তারপরও তারা যেটি করেছেন, তা ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণ। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আনোয়ারুল কবির বলেন, কেউ চাকরির বিধি লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে রামেক হাসপাতাল থেকে পাওয়া সিনিয়র স্টাফ নার্স সাইমা ইয়াসমিন ও জাকিয়া সুলতানার মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও দুটি ফোনই বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে রামেক হাসপাতালের সেবিকারা জানান, তারা বিদেশে আছেন।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার