শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, ৫ দিন পর খুলছে সেই কলেজ


, আপডেট করা হয়েছে : 01-07-2022

শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, ৫ দিন পর খুলছে সেই কলেজ

আশুলিয়ার হাজী ইউনুস আলী কলেজ খুলছে আগামীকাল শনিবার। ওই কলেজের শিক্ষক উৎপল হত্যাকণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার এ তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মনে করছেন তাদের সঙ্গেও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। আসলে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কোনো সুযোগ নেই। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। পুলিশ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, পুলিশ বর্তমানে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখতে সর্বোচ্চ কাজ করছে। পুলিশের একটি টহল টিম স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়োজিত থাকবে। যদি কোথাও কোনো ইভটিজার থাকে, তাহলে পুলিশকে দ্রুত জানাতে হবে। যাতে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া যায়। 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শিক্ষক উৎপল হত্যার ন্যায্য বিচার হবে। প্রভাবশালীদের চাপে এখানে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রভাবের কোনো সুযোগ নেই। এ সুযোগ অতীতেও ছিল না। আসামি জিতুর বয়স আমরা বার্থ সার্টিফিকেট অনুযায়ী তদন্ত জমা দেব। এখানে কোনো সন্দেহ নেই।

এ সময় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি অভিভাবকরাও শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমারা এসব ব্যবহারে ব্যথিত হই। আমরা চাই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের ত্রিমুখী সম্পর্কের মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হোক।

শিক্ষিকা তানিয়া আক্তার বলেন, আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে বাসায় ফিরতে পারবো কিনা এ নিয়ে সংশয় থাকি। যে পরিমাণে ইভটিজিংয়ের ঘটনা ঘটছে এর প্রতি পুলিশের নজর দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই।

ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক ইলিয়াস শাহী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, তার সমাধানের জন্য পুলিশ প্রশাসন যাতে প্রতিদিন একবার হলেও এই প্রতিষ্ঠানে পুলিশ টহল দেয়। 

অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক উৎপল হত্যা ছিল মধ্যযুগীয় সব চেয়ে আলোচিত বর্বরতা। কারণ যিনি শিক্ষা দান করেছেন তাকেই হত্যা করা হয়েছে। এ রকম হলে গোটা পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে আসবে। তাকে এমন ভাবে পিটানো হয়েছে, কলিজা টুকরো টুকরো হয়ে গেছে, কিডনি অচল হয়ে গিয়েছিল। স্ক্রিনে দেখেছি তিনি মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছেন। এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। একজন মানুষ মারা যেতেই পারে। কিন্তু এভাবে মৃত্য কাম্য নয়। সামান্য স্বার্থের জন্য ছাত্ররা তাকে হত্যা করবে কেন? গত বছরও তাকে পাথর মেরেছিল। 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. হুমায়ন কবির, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাভার সার্কেল শাহিদুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার ওসি কামরুজ্জামান, থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলামসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার