নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকতার হোসেন টিংকুকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আকতার হোসেন টিংকু ওই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। ঘটনার পর দিন ১৯ জুন লাঞ্ছিত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে সরিয়ে তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে এ ঘটনায় আকতার হোসেনকে তিন দিনের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মশিয়ার রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নড়াইল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুকের স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী বলেন, অধ্যক্ষকে হেনস্তা করার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনার পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও মিডিয়ার খবরে আকতার হোসেনকে জড়িত থাকার বিষয়ে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। যে কারণে তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না বলে আমরা মনে করি। এজন্য আমরা দলীয় পদ থেকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলেছি।
কারণ দর্শানো চিঠিতে বলা হয়েছে- মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের এক ছাত্রের মোবাইলে স্ট্যাটাস নিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। আপনি ওই কলেজের একজন শিক্ষক। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দেখা যায়, আপনার উপস্থিতিতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরিয়ে বের করে আনা হয়, যা নিন্দনীয় ও শিক্ষক সমাজকে হেয়প্রতিপন্ন করার শামিল। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ও মিডিয়ার খবরে আপনাকে জড়িত করে সংবাদ হচ্ছে। সে কারণে আপনি এর দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। আমরা মনে করি, আপনি সভাপতি হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক আকতার হোসেন বলেন, যেখানে হাজার হাজার লোকের বিক্ষোভে উত্তাল জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে আমার মতো অতি নগন্য একজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির কী ভূমিকা থাকতে পারে? এরপরও আমি বিষয়টি সামলাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। সেটা ভিটিও ফুটেজ দেখলে এর প্রমাণ মিলবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতপক্ষে ঘটনার পরদিন নড়াইল-১ আসনের এমপির উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্টরা আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের মৌখিক দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠেছেন।