কোপায় টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা


, আপডেট করা হয়েছে : 16-07-2024

কোপায় টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

ম্যাচের বিরতিতে কলম্বিয়ান পপতারকা শাকিরা গাইলেন-‘হিপস ডোন্ট লাই’। সঙ্গে আরও তিনটি গান। তার উদ্দাম নৃত্যে উত্তাল হলো মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়াম। বিরতি শেষে কান্নার কোরাস। ৬৬ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ার সময় লিওনেল মেসির শ্রাবণধারার কান্না দিয়ে যার শুরু। তীরে এসে তরি ডোবার শঙ্কায় পরে শিশুর মতো কেঁদেছেন আর্জেন্টিনা অধিনায়ক।


টেলিভিশনের পর্দায় মহানায়কের কান্নার দৃশ্য দেখে অনেক আর্জেন্টাইন সমর্থকেরও চোখ ভিজে যায়। গোলশূন্য ৯০ মিনিট শেষে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, বাড়ে কান্নার বেগ। বদলি হিসাবে নেমে ১১২ মিনিটে লাওতারো মার্তিনেজ করেন কোপা আমেরিকার শিরোপা নির্ধারণী গোল। এরপর ডাগআউটে ছুটে গিয়ে মেসিকে জড়িয়ে ধরে শুরু হয় মার্তিনেজের শাপমোচনের কান্না।


একটু পর তুলে নেওয়া হয় আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলা আনহেল দি মারিয়াকে। ডাগআউটে ফিরে কান্নাভেজা চোখে মেসিকে জড়িয়ে ধরেন দি মারিয়া। ১৬ বছরের সতীর্থ ও বন্ধুকে বিদায় জানাতে গিয়ে মেসিও কাঁদলেন আরেকবার। এরপর রেফারির শেষ বাঁশি এবং কলম্বিয়ার স্বপ্নভঙ্গের হলুদ কান্না ও আর্জেন্টিনার ঐতিহাসিক ত্রিমুকুট জয়ের আনন্দাশ্রু মিলেমিশে একাকার।


বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে দর্শক হাঙ্গামায় ৮২ মিনিট দেরিতে শুরু হওয়া তুঙ্গস্পর্শী আবেগের ফাইনালে কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জিতে নিল আর্জেন্টিনা। মার্তিনেজের গোলে দি মারিয়ার বিদায় রাঙিয়ে প্রথম লাতিন দল হিসাবে টানা তিনটি বড় শিরোপা জয়ের অনন্য কীর্তিও গড়েছেন মেসিরা।


২০২১ কোপা আমেরিকার পর ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ জেতা আর্জেন্টেনা এবার জিতল ২০২৪ কোপা আমেরিকা। এর আগে স্পেন এই কীর্তি গড়েছিল ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ ইউরো জিতে। আর্জেন্টিনা ত্রিমুকুট জয়ের কীর্তি গড়ল কলম্বিয়ার টানা ২৮ ম্যাচের অজেয় যাত্রা থামিয়ে। কোপার ফাইনালের আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই সবশেষ হেরেছিল কলম্বিয়া। গোটা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেও নিজেদের ২৩ বছরের শিরোপাখরা ঘোচাতে পারলেন না হামেস রদ্রিগেজরা।


ফাইনালে গোল করাটাকে অভ্যাস বানিয়ে ফেলা দি মারিয়া বিদায়ি ম্যাচে গোল না পেলেও খেলেছেন দুর্দান্ত। তাকে চ্যাম্পিয়ন হিসাবে বিদায় জানোনোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া মেসির মুখে শেষ দৃশ্যে হাসি ফোটান রাওতারো মার্তিনেজ। আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতলেও ব্যক্তি মার্তিনেজকে কাতার থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল। বিশ্বকাপে ছয় ম্যাচ খেলেও গোলের খাতা খুলতে না পারা সেই মার্তিনেজই এবার পাঁচ গোল করে কোপার সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন। অতিরিক্ত সময়ে বদলি হিসাবে নেমে ফাইনালের নায়কও তিনি। প্রথমার্ধে চালকের আসনে থাকা কলম্বিয়া পোস্টের বাধায় গোলবঞ্চিত হয়।


দ্বিতীয়ার্ধে মেসি চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর আর্জেন্টিনার নিকো গঞ্জালেসের গোল বাতিল হয় অফসাইডে। অতিরিক্ত সময়ের খেলাও যখন শেষের পথে, তখনই জিওভানি লো সেলসোর পাস থেকে কলম্বিয়া গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দি মারিয়ার স্বপ্নের মতো বিদায় নিশ্চিত করেন মার্তিনেজ।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার