কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। দূর থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ভবনের রড ধরে ঝুলে আছেন এক তরুণ। এ অবস্থায় তাকে পরপর অন্তত ছয় রাউন্ড গুলি করে পুলিশ। এরপর পুলিশ চলে গেলেও সেই তরুণ সেখানেই ঝুলে ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে নেট দুনিয়ায় ওঠে প্রতিবাদ ও সমালোচনার ঝড়। কিন্তু ছেলেটির পরিচয় কি? ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে? সে কি বেঁচে আছে? এমন নানান প্রশ্ন ছিল সবার মনে।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটে গত ১৯ জুলাই। ঢাকার রামপুরার মেরাদিয়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি ভবনে। ভুক্তভোগী তরুণের নাম আমির হোসেন (১৮)। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঢাকায় ফুফুর বাসায় থেকে কাজ করতেন রামপুরার একটি রেস্তোরাঁয়।
সেদিন ঘটনাস্থল থেকে আমির কীভাবে প্রাণে বেঁচে ফিরেছিলেন সে কথা জানিয়েছেন বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেনডেন্ট টিভিকে।
তিনি বলেন, “ভয়ে আমি ছাদের ওপর উঠে গিয়েছিলাম। আমার পেছন পেছন পুলিশও গিয়েছে। উপর থেকে গুলি করছিল আর বারবার বলছিল নিচে ঝাঁপ দিতে। তবে আমি ঝাঁপ দেই নাই। এরইমধ্যে আরেকজন পুলিশ তিন তলা থেকে গুলি করছিলেন, তারই একটি গুলি আমার পায়ে লাগে।”
আমির হোসেন আরও বলেন, “আমাকে মোট ছয় রাউন্ড গুলি করা হয়েছে। গুলি লাগার পর আমি যেখানে পড়ে যাই, সেখানে অনেকক্ষণ ছটফট করেছিলাম। আমাকে যখন উদ্ধার করা যায়, এর ১০-১৫ মিনিট পর গেলেই আমাকে মৃত উদ্ধার করতে হত।”
তিন তলায় প্রায় তিন ঘণ্টা আটকা ছিলেন আমির। তাকে উদ্ধার করেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাব্বী বলেন, “আমার সঙ্গে যারা সেদিন ছিল তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজনকে অনুরোধ করে নিয়ে আসি। এরপর চারজন মিলে আমিরকে কোনোরকমে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
গুলিবিদ্ধ আমিরের ফুফু নাছিমা বেগম বলেন, “আমাদের এখন একটাই চাওয়া নিরপরাধ আমিরকে যারা গুলি করেছে তাদের যেন বিচার হয়।”