শিক্ষার্থীদের দাবি না মেনে টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রশাসনিক ভবনের দরজা ভেঙে বের হয়েছেন সাভারের নয়ারহাটে অবস্থিত জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে তারা একযোগে সবাই পদত্যাগ করেছেন বলেও জানা গেছে।
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের সব দাবি মেনে না নিয়ে এভাবে চলে যাওয়ার সময় প্রশাসনিক ভবনের পাহারায় থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা হয়। এর প্রতিবাদে বেলা ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১টার দিকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন নিটারের শিক্ষার্থীরা।
এর আগে ৬ শিক্ষক, ৩ কর্মকর্তা ও ৫ কর্মচারীর পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত রবিবার দুপুরের পর থেকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। এ সময় তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ১৮০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়ার পর কয়েকজনকে পাহারায় রেখে হোস্টেলে চলে যান।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ৬ শিক্ষকসহ ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। আমরা তাদের পদত্যাগসহ আরও কিছু দাবি জানিয়েছি। কিন্তু শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের পদত্যাগের পরিবর্তে অব্যাহতির আশ্বাস দেওয়া হয়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তালা ভেঙে প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হয়ে পালিয়ে যান। এ সময় তারা পাহারায় থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে জখম করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে নিটারের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) একজন শিক্ষক বলেন, ‘কোনো প্রমাণ ছাড়াই শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাদের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা টানা ৪২ ঘণ্টা ধরে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে আমরা মঙ্গলবার সকালে প্রশাসনিক ভবনের তালা ভেঙে বের হয়ে এসেছি। আমরা ১৮০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী একযোগে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছি। আজই নিটারের পরিচালনা পর্ষদের কাছে এই পদত্যাগপত্র জমা দেব। তবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন।