রাজশাহীর পদ্মায় পানি বেড়ে ডুবেছে ফসল, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাড়িঘর


, আপডেট করা হয়েছে : 27-09-2024

রাজশাহীর পদ্মায় পানি বেড়ে ডুবেছে ফসল, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাড়িঘর

রাজশাহীতে বাড়ছে পদ্মা নদীর পানি। বন্যার আতঙ্কে চর এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ি। ভেসে যাচ্ছে ফসলি জমি। পদ্মা নদীর ডান তীরে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া এই চরের কয়েকটি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে এক সপ্তাহ ধরে।


ভাঙন চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাকা এবং নারায়ণপুর এলাকায়ও। চাঁপাইনবাবগঞ্জেই পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে প্রায় ছয় হাজার পরিবার। তলিয়ে গেছে নাটোরের লালপুর উপজেলার কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরের বাসিন্দাদের অনেকেই এখন ভাঙন আতঙ্কে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ সবকিছু নৌকায় তুলে চলে আসছে এই পারে। খুঁজছে বসবাসের নতুন ঠিকানা।



রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রেলবাজার ঘাটে এমনই কয়েকটি নৌকা এসে ভেড়ে। নৌকাগুলোর কোনোটিতে গরু-ছাগল, কোনোটিতে বস্তায় বস্তায় ধান আবার কোনোটিতে চর থেকে ভেঙে নিয়ে আসা বাড়ির চাল, টিনের ছাউনি ও আসবাবপত্র।



এসব নৌকায় আসে চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর বয়ারমারি গ্রামের আসগর আলীর পরিবার। আসগর আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রতিবছরই তাঁদের গ্রাম পদ্মায় ভাঙে। এরইমধ্যে ১৫ বিঘা কৃষিজমি হারিয়েছেন তিনি। বাড়ি সরিয়েছেন ছয়বার। এবারও নদীর ভাঙন বাড়ির কাছে চলে আসার কারণে তাঁরা চলে এলেন এ পারে। মাছমারা গ্রামে আশ্রয় নেবেন তাঁরা।


চর আমতলা খাসমহলের বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন বলেন, কয়েক দিন ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে তাদের এলাকায় কয়েকটা রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে টমেটো ও ধানের খেত। চর বয়ারমারি গ্রামের অন্তত ৫০টি বাড়ি সরিয়ে নিতে হয়েছে। চর বয়ারমারির পাশে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জেলেপাড়া গ্রামেও তীব্র নদীভাঙন চলছে। পোলাডাঙ্গা এলাকায় একটি সেতু ছিল। এই সেতুও ভেঙে গেছে নদীভাঙনের কারণে।



খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলাতুলি ও নারায়ণপুর ইউনিয়নের প্রায় চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। আগের বছরও এই এলাকার দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরইমধ্যে ইউনিয়নের এক-তৃতীয়াংশ কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এবারও ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বাড়িঘর, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নেও চলছে পদ্মা নদীর ভাঙন। এই এলাকার অনেকেই আতঙ্কে বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। শিবগঞ্জের পাকা ইউনিয়নে প্রায় ২৫০, দুর্লভপুর ইউনিয়নে ৪ হাজার ৫০০ ও মনাকষা ইউনিয়নে প্রায় ৩৫০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার