গাজায় এক বছর ধরে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত ইসরাইলি সেনাবাহিনী। যুদ্ধে ডাকা হয় রিজার্ভ সেনা। যুদ্ধে পরিসর বাড়িয়ে নতুন সংকটে পড়েছে দেশটি। এ অবস্থায় ইসরাইল নতুন সেনা সংগ্রহ করতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছে। বিশেষ করে, তারা যখন লেবাননে নতুন করে যুদ্ধ শুরু করে চরম সেনা সংকটে ভুগছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর থেকে প্রায় তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডাকা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ শতাংশই ৪০ বছরের বেশি বয়সি, যাদের সাধারণত ছাড় দেওয়া হয়ে থাকে।
ইসরাইলে পুরুষ ও নারীদের জন্য ১৮ বছর বয়স থেকে সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক, যদিও কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। দেশটি বর্তমানে গাজায় হামাস এবং লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধ চালাচ্ছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে ইসরাইল ৩৬৭ সেনা হারিয়েছে। এছাড়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর লেবাননে অভিযান শুরুর পর থেকে নিহত হয়েছেন ৩৭ ইসরাইলি সেনা।
এ অবস্থায় ইসরাইলের রিজার্ভ সেনাদের ডিউটির সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। অনেক সেনা অভিযোগ করেছেন, তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না।
আরিয়েল সেরি-লেভি নামে একজন ইসরাইলি রিজার্ভ সেনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, আমরা ডুবে যাচ্ছি। তিনি জানান, গত ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে তাকে চারবার ডাকা হয়েছে। বর্তমানে যুদ্ধ চালানোর পক্ষে যারা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এই ইসরাইলি সেনা। তিনি বলেছেন, আমাদের এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে, কারণ আমাদের সেনার অভাব হচ্ছে।
আরেক রিজার্ভ সেনা বলেন, ক্লান্তি ও নৈতিক অবসাদের কারণে আমি আমার চাকরি হারিয়েছি।
অনেক ফ্রিল্যান্সার যুদ্ধের কারণে কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। যদিও ইসরাইলি সরকার রিজার্ভ সেনাদের জন্য একটি ন্যূনতম আয়ের গ্যারান্টি দেয়।
সম্প্রতি দুই হাজার রিজার্ভ সেনার স্ত্রীর একটি খোলা চিঠিতে লিখেছেন, যাদের সেবা দিতে হচ্ছে তাদের জন্য চাপ কমানো প্রয়োজন।
এ বছর ২৫০ দিন যুদ্ধ করেছেন ৫২ বছর বয়সি ডেভিড জেনু। তিনি বলেন, এটি দেশের সেবা করার সম্মান এবং আমি যতদিন পারি তা চালিয়ে যাব। তবে, যুদ্ধের এই পরিস্থিতিতে আমাদের সেনার অভাব রয়েছে।
সেনা সংকটে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এখন একটি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে। এটি দেশটির নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।