যে ৭ স্টেটের ভোট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নির্ধারণ করে


, আপডেট করা হয়েছে : 05-11-2024

যে ৭ স্টেটের ভোট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ভাগ্য নির্ধারণ করে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের শেষ সময়ে 'সুইং স্টেট' বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলো চষে বেড়িয়েছিলেন দুই প্রার্থী- ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিস। নির্বাচন নিয়ে করা জরিপগুলো দুই প্রার্থীর মধ্যে তুমুল লড়াইয়ের আভাসও দিচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রে ৫০টি স্টেটে একসঙ্গে ভোট হলেও মূলত সবারই নজর থাকে সুইং স্টেটের দিকে। বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই কে এগিয়ে, সেটি সমর্থনের ভিত্তিতে ও জরিপের মাধ্যম আগেভাগে ধারণা করা যায়। কিন্তু সুইং স্টেটগুলোতে তা অনুমান করা কঠিন। হোয়াইট হাউসে জয়ী হওয়ার জন্য কে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবে- তা নির্ধারণ করবে এই সাতটি সুইং স্টেট। এই স্টেটগুলোর মোট ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট সংখ্যা ৯৩। সাতটি স্টেটকে সুইং বলা হচ্ছে। সেগুলো হলো অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন।


‘সুইং স্টেট’ — যেগুলো সাধারণত কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পক্ষে থাকে না, বরং এই নির্বাচনে যেকোনও দিকে যেতে পারে। কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের প্রচারণায় এই সাতটি অঙ্গরাজ্যে বিশেষভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন। এই রাজ্যগুলো হলো: অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিন। এখানে কয়েকটি ভোটের ব্যবধানই নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণ করতে পারে।


মেক্সিকো সীমান্তবর্তী অ্যারিজোনা রাজ্যে। অ্যারিজোনার ভোটারদের এক–তৃতীয়াংশ হিস্পানিক। এই রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট ১১টি। গতবার এই রাজ্যে বাইডেন জিতেছিলেন। ডাকযোগে বা মেইলে ভোট দেওয়া অ্যারিজোনায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। ২০২০ সালে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোটার ভাট দিয়েছিলেন মেইলের মাধ্যমে। অ্যারিজোনায় ডাকযোগে বা মেইলে এত এত পরিমাণ ভোট দেয়, যার ফলে নির্বাচনী কর্মকর্তারা ব্যালট গ্রহণের শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পরও গণনা শুরু করতে পারে না। কারণ ব্যালটে নির্বাচন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত মেইলের হিসাব শুরু করা যাবে না। এছাড়াও রাজ্যেটির বৃহত্তম ম্যারিকোপা কাউন্টির সমস্ত ব্যালটের এক-পঞ্চমাংশ মেইলের মাধ্যমে আসে। তাই ব্যালট গণনা করতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে৷


১৯৯২ সালের পর গত নির্বাচনেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে জর্জিয়ায় জয় পেয়েছিলেন জো বাইডেন। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার ভোটের ব্যবধান ছিল মাত্র ২ দশমিক ২ শতাংশ। এই অঙ্গরাজ্যের ৩৩ শতাংশ ভোটার কৃষ্ণাঙ্গ। ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় এই রাজ্যের নির্বাচনের ফল পাল্টানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছিল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। যার বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে।


এই রাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ১৬টি। নির্বাচনের শুরুতে ব্যক্তিগত ভোটদানে জর্জিয়াতে জনপ্রিয়। স্টেটটির নির্বাচনী কর্মকর্তারা আশা করছেন, ৬৫ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ ব্যালট শুরুতে প্রদান করেবে ভোটাররা।  এছাড়াও মেইল বা ডাকে প্রায় ৫ শতাংশ ভোটে প্রদান করা হতে পারে।


এদিকে স্বাক্ষর যাচাইকরণের মতো পদক্ষেপ নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে শুরু হয়। যদিও গণনা শুরু করার জন্য নির্বাচনের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচন কর্মকর্তাদের।  


আবার এই স্টেটে বিদেশী এবং সামরিক ভোটাররা ৫ নভেম্বরের মধ্যে পোস্টমার্ক করলে নির্বাচনের তিনদিন পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে। এই ধরনের ২১ হাজারেও বেশি ব্যালটের অনুরোধ করা হয়েছিল। তাই এই ভোটগুলি গণনা না হওয়া পর্যন্ত ফলাফল সমাধান নাও হতে পারে।


ফোর্ড, জেনারেল মোটরস ও ক্রাইসলামের মতো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা মিশিগান। গত নির্বাচনে বাইডেন এই রাজ্যে জয়লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি রুখতে বিপুল পরিমাণ করারোপ করেন। রাজ্যের ভোটারদের উল্লেখযোগ্য অংশ আরব–আমেরিকান। এবার গাজা যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে তাদের সমর্থন আদায়ের চ্যালেঞ্জ কমলা হ্যারিসের সামনে। এই রাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ১৫টি। ২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে মিশিগানে প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত ভোট প্রদান শুরু করেছে। নির্বাচনের আটদিন আগে ৫ হাজাররেও বেশি মানুষ মেইলে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনি কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাজ্যটি ২০২০ সালের তুলনায় আরও দ্রুত ফলাফল প্রদান করতে পারবে। 



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার