গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা তৃতীয় দিনের মতো বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে।
তারা জানিয়েছেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বেতন পরিশোধের ঘোষণার আশ্বাস দিলেও তা রক্ষা করেননি। এখন আমরা বেতন ছাড়া ঘরে ফিরবো না, মহাসড়কও ছাড়বো না। সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে শ্রমিকরা এসব কথা বলেন।
তৃতীয় দিনের মতো শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তারা রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে পালাক্রমে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে।
টানা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন লিয়াকত আলী নামের টিএনজেড গ্রুপের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, আমরা একাধিকবার আশ্বাস পেয়েছি। কিন্তু আশ্বাসের প্রেক্ষিতে বেতন পাইনি। আমরা আশ্বাস দিয়ে কি করবো। আমাদের বেতন দরকার। আমাদের ঘর ভাড়া বাকী পড়ে আছে। বেতন পেলে ঘর ভাড়া দিবো, কিন্তু বাড়ির মালিক তা মানতে নারাজ।
আরেক শ্রমিক আরিফ মিয়া বলেন, আমরা স্থানীয় মুদির দোকান থেকে মাসিক হারে বাকী খাই। বেতন পাওয়ার পরপরই ঘর ভাড়া ও দোকান বাকী পরিশোধ করতে হয়। দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে। বেতনের একটি অংশ গ্রামের বাড়িতে মা বাবার কাছে পাঠাতে হয়। তাদের কাছে টাকা না পাঠাতে পারায় তারাও কষ্টে আছে। আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না।
এদিকে মহাসড়ক অবরোধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় দেখা দিয়েছে যানজটের। ময়মনসিংহ গামী ও ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহন কম চলাচল করছে। গাজীপুর থেকে ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন।
রাহুল নামের এক বেসরকারি ব্যাংকের অফিস সহকারী বলেন, খুব ভোরে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে উদ্দেশ্যে গাজীপুর থেকে রওনা হই। স্বল্প দূরত্বের যানে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছি।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, আমরা শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে দেয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা বলছে বেতন না পেয়ে মহাসড়ক ছাড়বে না। শ্রমিকরা সোমবার সকালেও মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ঢাকাগামী যানবাহন গুলোকে ভোগড়া থেকে ডাইভারসন দিচ্ছি। ঢাকা বাইপাস হয়ে, কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে বা তিনশ ফিট হয়ে যাতে ঢাকায় যেতে পারে। অপরদিকে, ঢাকা থেকে যেগুলো ময়মনসিংহ মুখী গাড়ি গুলোকে স্টেশন রোড হয়ে মিরের বাজার হয়ে ওদিক দিয়ে ঢাকা বাইপাস হয়ে তারা আসতে পারে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকায় দুই দিকেই যানজটের তৈরি হয়েছে। আমরা তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছি।