দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক হন সাবেক মেয়র কিরণ


, আপডেট করা হয়েছে : 23-11-2024

দুর্নীতি করে অঢেল সম্পদের মালিক হন সাবেক মেয়র কিরণ

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (গাসিক) সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুর রহমানের একটি বাগানবাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এই জমির মূল্য ১৬০ কোটি টাকা। বালু নদীর ফোরশোর ও সংখ্যালঘুদের জমি দখল করে গড়ে তোলা এই বাগানবাড়িতে এখন কেউ নেই। বাড়ির গেটে তালা মেরে পালিয়েছে নিরাপত্তা দল।


গাজীপুরের কালীগঞ্জের ছিকুলিয়া গ্রামে অবস্থিত বিলাসবহুল এই বাগানবাড়ি। সোমবার তিনি বিজিবির হাতে আটক হলে বাড়ির দেখভাল করার লোকেরা প্রধান গেটে তালা মেরে পালিয়ে যান। থাকার জন্য বাংলো, ফুলের বাগানসহ একটি পরিপূর্ণ রিসোর্টের কাজ চলমান ছিল।


স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দুদিন আগেও লোকজন ছিল। কাজ চলমান ছিল। এখন নেই। ২০২১ ও ২০২২ সালে ভারপ্রাপ্ত মেয়র থাকা অবস্থায় কিরণ নিজের ও তার প্রতিষ্ঠান গ্রিনডট বিল্ডার্সের নামে ৩.২৬ একর জমি ক্রয় করেছেন। মোট ৬টি নামজারি করে জমাভাগ করার পর খাজনা পরিশোধ করেছেন তিনি। সংখ্যালঘুদের জমি নামমাত্র মূল্যে ক্রয় করেছেন কিরণ। একই সঙ্গে বালু নদীর ফোরশোরও দখল করে মাটি ও বালু ভরাট করেছেন। এখন এই বাগানবাড়ির আওতায় প্রায় ৪০ বিঘা জমি রয়েছে। ১০ বিঘা জমি ক্রয় করে দখল করতে করতে এখন ৪০ বিঘা কবজা করেছেন কিরণ। স্থানীয় বাসিন্দা সাধন চন্দ্র দাস বলেন, মেয়র কিরণ স্যার এই বাড়ির মালিক। তিনি কতটুকু জমি কিনেছেন এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা বললে আমার বিপদ হবে। আমি জানি না।


তবে এই জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে দালালি যারা করেছেন তাদের দুজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেছেন, জমি কেনা ১০ বিঘার মতো। বায়না করা আছে আরও ১০ বিঘা। বাকি জমি কিরণ কীভাবে নিয়েছেন তা তারা জানেন না।


জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বলেছেন, ওখানে জমির বর্তমান মূল্য ২০ লাখ টাকা কাঠা। সেই হিসাবে ৪০ বিঘা জমির মূল্য ১৬০ কোটি টাকা হবে।


পূবাইল ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আরিফউল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ নিজ নামে ও তার প্রতিষ্ঠান গ্রিনডট বিল্ডার্সের নামে ২০২১-২০২২ সালে ৬টি খারিজের মাধ্যমে ৩.২৬ একর জমির মালিক হয়েছেন।


আসাদুর রহমান কিরণ আটক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ৫ আগস্টের আগে কিরণ এই প্রতিনিধিকে বলেছিলেন, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই।


সোমবার যশোরের শার্শা থানার শিকারপুর সীমান্তে কিরণ বিজিবির হাতে আটক হন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোয় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় তিনটি হত্যা মামলাসহ ৭টি মামলা রয়েছে বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়সার আহমদ। ভারতে অনুপ্রবেশের মামলার আনুষ্ঠানিকতা শেষে কিরণকে টঙ্গীতে আনা হবে বলে জানিয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সূত্রঃযুগান্তর


  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার