আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের মৃত্যুকে শহিদি মৃত্যু উল্লেখ করে তার পবিত্র রক্তে মুসলিম উম্মাহ উজ্জীবিত হবে বলে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মিজানুর রহমান আজহারী।
তিনি বলেন, লাখো মুসলিমের পরম দোয়া ও মমতায় সিক্ত শহিদ সাইফুল ইসলাম আলিফ। ইনশাআল্লাহ, শাহাদাতের এ পবিত্র রক্তে উজ্জীবিত হবে গোটা উম্মাহ।
বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের এক পোস্টে সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজার ছবি শেয়ার করে এসব কথা লেখেন মিজানুর রহমান আজহারী।
তিনি বলেন, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মোকাবেলায় আপনার নাজরানা আল্লাহ কবুল করুন। জেনে রাখুন হে শহিদ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়— আপনার পথেই হাঁটবে আগামীর তরুণরা।
এর আগে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আজহারী বলেছিলেন, দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রামের আইনজীবী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সম্ভবত দেশকে অস্থিতিশীল করার সর্বশেষ ট্রাম্পকার্ড খেলা হচ্ছে। দয়া করে সবাই শান্ত থাকুন। কোন উস্কানিতে পা দেয়া যাবে না। বিজয় আমাদেরই হবে ইনশাআল্লাহ।
অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে। জানাজার সময় লাখো মানুষ উপস্থিত থেকে এই তরুণ আইনজীবীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। জানাজায় অংশগ্রহণ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, নাগরিক কমিটির সদস্য সারজিস আলমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সাইফুল ইসলামের জানাজার সময় উপস্থিত সবাই গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে বিদায় জানান।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে সাইফুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেও আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার শিকার হন। বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে ইসকন সদস্য ও চিন্ময়ের অনুসারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা আদালত চত্বরে অবস্থিত মসজিদে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ তাদের বাধা দেন। পরে সাইফুলকে ধরে নিয়ে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম টাওয়ারের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশের ১০ সদস্যসহ আহত হন অন্তত ৩৭ জন।
এর আগে সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৩১ অক্টোবর তিনি চট্টগ্রামের এক সমাবেশে জাতীয় পতাকা অবমাননা করেন।