বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নির্ধারিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) আগামী ৯ বা ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ঐ বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। সবকিছু ঠিক থাকলে এটিই হবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতীয় কোনো জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার প্রথম ঢাকা সফর।
গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, আমরা (ভারতের সঙ্গে) সুসম্পর্ক চাই। এক্ষেত্রে উভয় পক্ষেরই এটা চাওয়া দরকার এবং এজন্য কাজ করা উচিত। তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর এফওসির জন্য নির্ধারিত থাকলেও এটি একদিন আগে ৯ ডিসেম্বরও অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসিম উদ্দিন এবং ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি নিজ নিজ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।
সূত্র জানায়, বিক্রম মিশ্রির ঢাকা সফরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো পর্যালোচনা, রাজনৈতিক বোঝাপড়া, ভারতীয় গণমাধ্যমের বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচার, ভারতে বসে শেখ হাসিনার বক্তব্য, ভিসার জট খোলা, সীমান্ত হত্যা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে দেশটিতে রপ্তানির নানা বাধা সরানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশ জোর দিতে পারে। প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে দিল্লিতে সর্বশেষ পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের এক খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উভয় দেশের কেউই এখনো এই সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে বিক্রম মিশ্রি সম্ভবত আগামী ১০ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক আলোচনার জন্য বাংলাদেশে যাবেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বিক্রম মিশ্রির এই সফরটি এমন এক সময়ে হতে চলেছে যখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে অভূতপূর্ব উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। হিন্দু সংখ্যালঘু ইস্যু এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের অভিযোগে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়েকটি ভারতীয় রাজ্যে বিক্ষোভ হচ্ছে।
এছাড়া ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার ঘটনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানায়।
হিন্দুস্তান টাইমস আরও বলছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়।