আলু-পেঁয়াজ-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, সয়াবিনে অস্বস্তি


, আপডেট করা হয়েছে : 14-12-2024

আলু-পেঁয়াজ-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, সয়াবিনে অস্বস্তি

কিছুটা স্বস্তি ফিরছে বাজারে। সবজি, আলু, পেঁয়াজসহ কিছু পণ্যের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা কমেছে। তবে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি। খুচরা দোকানগুলোতে দুই-একটি ব্র্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির সয়াবিন তেল মিলছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার কয়েকটি পণ্য আমদানিতে শুল্ক কর ছাড় দেওয়ার কারণে পণ্যের আমদানি বেড়েছে। এতে সরবরাহ বাড়ছে বাজারে, যা পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখছে ইতিবাচক ভূমিকা।


শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার মহাখালী কাঁচাবাজার, তেজগাঁও কলোনি বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 


গত সপ্তাহের চেয়ে ছোলা কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়। খোলা ও প্যাকেট আটার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। গত এক মাসে আটার দর না কমলেও এক বছরের চেয়ে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে।


পেঁয়াজের দর বেশ কমেছে। এক-দেড় মাস আগে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কেজিতে ৪০ টাকার মতো কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০৪ থেকে ১১০ টাকা। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা আর আমদানি পেঁয়াজের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি দেড় মাস আগে ছিল প্রায় ১০০ টাকা। গত বছরের এ সময় দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি ছিল ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। সেই হিসাবে অর্ধেকের বেশি কমেছে দর। নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু হলে দর আরো কমবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। 


শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমতে শুরু করেছে দাম। গড়ে সবজির কেজি কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সপ্তাহ দুয়েক আগে কেজি ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি শালগম ৪০ থেকে ৫০ এবং বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে সবজি দুটির দর ছিল ৬০ ও ৮০ টাকার আশপাশে।


এদিকে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ পরিস্থিতি এখনো ঠিক হয়নি। খুচরা দোকানগুলোতে দুই-একটি ব্র্যান্ড ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানির সয়াবিন তেল মিলছে না। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে চালের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে কমেছে নতুন আলু ও পেঁয়াজের দাম।


বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দাম বাড়ানো হলেও ডিলাররা এখনো খুচরা দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ শুরু করেননি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো এক-দুই দিন সময় লাগতে পারে।


সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট শুরু হয়েছে প্রায় এক মাস হতে চলল। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী। এ অবস্থায় ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায়। সেটা গত সোমবারের কথা। এরপর চার দিন পার হলেও খুচরা বাজারে তেলের সরবরাহ ঠিক হয়নি।


রাজধানীর তিন বাজার ঘুরে হাতে গোনা কয়েকটি দোকানে শুধু তীর ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর অনেক দোকানে তেল ছিলই না।


বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে সরু চালের দাম। যেমন খুচরা পর্যায়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সরু প্রজাতির নাজিরশাইল চালের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে। দাম বাড়ার পর মানভেদে এক কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮৫ টাকায়। একইভাবে রশিদসহ অন্যান্য মিনিকেট চালের দামও ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। অন্যদিকে সরু চালের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে মোটা চালের ওপরও। যেমন ব্রি-২৮ ও ২৯ জাতের মোটা চালের দাম ১-২ টাকা বেড়েছে।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার