‘মির্জাপুর’ সিরিজের সাফল্য খ্যাতির তুঙ্গে পৌঁছে দিয়েছে অভিনেত্রী শ্বেতা ত্রিপাঠিকে। বলাই যায়, ওটিটির শীর্ষ তারকাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে চলছে ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’-২। 'মির্জাপুরে'র সাফল্য নিয়ে একটি গণমাধ্যম সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন শ্বেতা ত্রিপাঠি। এটি যুগান্তর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো—
সিদ্ধার্থ সেনগুপ্ত পরিচালিত ‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’র দ্বিতীয় মৌসুম দারুণ সফলতা পেয়েছে। চলতি বছর মুক্তি পেয়েছে মির্জাপুর-এর তৃতীয় কিস্তিও। জোড়া সাফল্যে দারুণ উৎফুল্ল অভিনেত্রী শ্বেতা ত্রিপাঠি।
তিনি বলেন, আমি যেখানেই যেতাম, সবাই প্রশ্ন করত— 'ইয়ে কালি কালি আঁখে ২' কবে আসবে? তাই আমরা একটু চাপেই ছিলাম। এসব আমাদের জীবনের অংশ। সবাই প্রচণ্ড পরিশ্রম করছি। তার ফল পাচ্ছি। দর্শকদের থেকে প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাচ্ছি। আর কী চাই।
‘ইয়ে কালি কালি আঁখে’র দুই মৌসুমের মধ্যে লম্বা সময়ের ব্যবধান। এই সিরিজের ‘শিখা’ হয়ে উঠতে আগের মৌসুম আবার দেখেছিলেন বলে জানান শ্বেতা। তিনি বলেন, মির্জাপুর ৩-এর সময়ও আমি আগের দুটি মৌসুম দেখেছিলাম। এই সিরিজের ক্ষেত্রেও তা–ই করেছি।
অভিনেত্রী বলেন, আমার অভিনীত চরিত্রের শারীরিক ভাষা, কণ্ঠস্বর ঝালিয়ে নেওয়ার জন্য আমি আগের কিস্তি দেখতে পছন্দ করি। নতুন মৌসুমে চেষ্টা করি আগের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে নিতে।
ওটিটি আসার পর প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে। অভিনয়ের ময়দানে শ্বেতা প্রতিযোগী হয়ে উঠতে কতটা পছন্দ করেন? হেসে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় আমি বিশ্বাসী নই। তবে মাঝেমধ্যে খুব হিংসা হয়। কখনো কখনো অন্য কারও অভিনীত চরিত্র দেখে আমার খুব হিংসা হয়। মনে হয়, আমি যদি ওই চরিত্রে অভিনয় করতে পারতাম! তবে পুরুষ অভিনেতাদের চরিত্রগুলো দেখে বেশি হিংসা হয়। এই যেমন ধরুন— এই সিরিজে তাহির (রাজ ভাসিন) যে চরিত্রে অভিনয় করেছে, সুযোগ পেলে আমি এ রকম চরিত্রে অভিনয় করতে চাইব। অভিনেত্রীদের এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ আসে না।
মানুষের মনঃসংযোগ ক্রমে কমে যাচ্ছে বলে উষ্মা প্রকাশ করে শ্বেতা বলেন, মানুষের এখন ধৈর্য কম। কোনো জিনিসের প্রতি এখন মনোনিবেশ করতে পারেন না তারা। ওটিটিতে কোনো ছবি বা সিরিজ দেখার সময় হাতে মুঠোফোন নিয়ে রিলস দেখতে থাকেন। সহজে সবাই একটা স্ক্রিন থেকে অন্য একটা স্ক্রিনে চলে যান। মানুষের মন ক্রমাগত যেন ছুটছে, আর বড়ই অস্থির।
সফলতার কথা প্রসঙ্গেও ভিন্নমত প্রকাশ করে অভিনেত্রী বলেন, এখন সফলতাকে আমাদের সমাজই নির্ধারণ করে দেয়। যোগ্যতা বা কী অর্জন করেছেন, তা এখন সফলতার মাপকাঠি নয়। আপনার দামি পোশাক, নামিদামি গাড়ি-বাড়ি—এসবের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে এখন সফলতার সংজ্ঞা।
তিনি বলেন, আমরা অন্ধ হয়ে যেতে বসেছি। ভুলে যাচ্ছি যে আমরা অভিনয়শিল্পী। আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি নিজের প্রতিভাকে আরও ধারালো করা। আর কোনো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলে সেটি মনপ্রাণ ঢেলে করা।