অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছি: হাসান আরিফের জানাজায় ড. কামাল


, আপডেট করা হয়েছে : 21-12-2024

অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছি: হাসান আরিফের জানাজায় ড. কামাল

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফের দ্বিতীয় জানাজা সুপ্রিম কোর্টে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে এ জানাজা সম্পন্ন হয়।


এসময় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন বলেন, অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছি। যাকে হারিয়েছি তিনি সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। ওনাকে হারানোয় বারে (সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি) একটা শূন্যতা সৃষ্টি হবে।


যারা চিনতেন তারা ভালা বন্ধু এবং অভিজ্ঞ আইনজীবী বন্ধুকে হারিয়েছেন। এ রকম লোক একজনের পর একজন আমরা হারাচ্ছি, যেটা খালি হচ্ছে সেটাকে পূরণ করা যাচ্ছে না।


ড. কামাল হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এ এফ হাসান আরিফের ভূমিকা স্মরণীয় ছিল। অভিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে যারা ছিলেন তার মধ্যে তিনি অন্যতম। আমি নিজে একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে হারিয়েছি। তার মাগফিরাত কামনা ও দোয়া করি।


জানাজায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা জ্যেষ্ঠ প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন, সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিসহনজ্যেষ্ঠ আইনজীবী অংশ নেন।   




জানাজায় স্মৃতিচারণ করেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এ এফ হাসান আরিফের ছেলে মুয়াজ আরিফ ও তার জুনিয়র অ্যাডভোকেট আশিক আল জলিল। জানাজা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এ মাহবুব উদ্দিন খোকন।


হৃদরোগে আক্রান্ত হলে শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার সময় তাকে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটের দিকে সেখানকার চিকিৎসকরা হাসান আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন। উপদেষ্টা হাসান আরিফ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন।


মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ শুক্রবার বিকেলে ধানমন্ডি ল্যাব এইড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তার জানাজা ও দাফনের সময় পরে জানানো হবে।


৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে গত ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন এ এফ হাসান আরিফ। তখন তাকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তাকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।


তিনি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ, নির্মাণ সালিশ, বাণিজ্যিক সালিশ, অর্থ, ব্যাংকিং এবং সিকিউরিটিজ বিষয়, করপোরেট, বাণিজ্যিক ও ট্যাক্সেশন বিষয়, সাংবিধানিক আইন বিষয়, পাবলিক আস্বাদন, আরবিট্রেশন এবং বিকল্প বিরোধ সমাধানের অন্যান্য পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছিলেন।


এ এফ হাসান আরিফ ২০০১ থেকে ২০০৫ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ২০০৭-২০০৮ সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়, ভূমি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


হাসান আরিফের জন্ম ১৯৪১ সালে অবিভক্ত ভারতবর্ষের কলকাতায়। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর স্নাতক ও এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।


কলকাতা হাইকোর্টে ১৯৬৭ সালে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। এরপর ঢাকায় এসে বাংলাদেশ হাইকোর্টে কাজ শুরু করেন হাসান আরিফ।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার