অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট তারকা শেন ওয়ার্ন বলেছিলেন, তার কাছে ক্রিকেট খুব সাধারণ একটি খেলা। এটিকে কঠিন না করে কেবল উপভোগের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু আদৌ কী সাধারণের বলয়ে আবদ্ধ রয়েছে ২২ গজের এই লড়াই। সম্ভবত না। ক্ষমতা প্রদর্শন, গোঁয়ার্তুমি কিংবা রাজনীতি এখন ক্রিকেটাঙ্গনের ত্রাস হয়ে উঠেছে।
গতকাল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চূড়ান্ত সূচি প্রকাশ করেছে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্টেও এমন কিছুর নজির পাওয়া গেছে। আয়োজক দেশ পাকিস্তান হলেও সেখানে গিয়ে খেলবে না বলে গোঁ ধরেছিল ভারত। পাকিস্তান জানিয়েছিল, এখানে এসেই খেলতে হবে। আইসিসি তখন নীরব দর্শকের ভ‚মিকায়। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে না গিয়ে ভারত খেলবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে, চূড়ান্ত সূচি ঘোষণার মধ্য দিয়ে এমনটিই জানানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি সকলেরই জানা ছিল।
ভারতের এই গোঁ ধরার কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ‘এ’ গ্রুপের বাকি ৩ দলকেই পড়তে হয়েছে গোলকধাঁধায়। তাদের অন্তত একবার দুবাইয়ে যেতে হবে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য। আর ভারত কোথাও যাবে না, কেবল দুবাইয়ে বসে প্রতিপক্ষের জন্য অপেক্ষা করবে। এই যাত্রাপথে রয়েছে বাংলাদেশেরও নাম, সঙ্গে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। আগামী বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে বৈশ্বিক এই টুর্নামেন্ট। উদ্বোধনী ম্যাচটি হবে পাকিস্তানের করাচিতে। খেলবে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচের পরে পাকিস্তানকে যেতে হবে দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য। পরের মাসের শুরুতে নিউজিল্যান্ডকেও একই কাজ করতে হবে, দুবাইয়ে গিয়ে কিউইদের খেলতে হবে ভারতের বিপক্ষে।
বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২০ ফেব্রুয়ারি। তার আগে পাকিস্তান নয়, টাইগার বাহিনীকে ভ্রমণ করতে হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে ভারতের বিপক্ষে খেলা শেষে উড়াল দিতে হবে পাকিস্তানে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড যখন আসা-যাওয়া নিয়ে দিন গুনবে ভারত তখন দুবাইয়ে খেলার পরিকল্পনা করবে। আবার ভারত সেমিফাইনালে উঠবে এমনটি ধরে রেখে প্রথম সেমিফাইনাল দুবাইয়ে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। যদি দলটি ফাইনালে যায় তাহলে পাকিস্তানের বদলে দুবাইয়ে হবে শিরোপা নির্ধারণী লড়াই।
ভবিষ্যতে ভারতে যদি কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট বসে সেখানে গিয়ে খেলবে না পাকিস্তান। তখন পাকিস্তানের জন্যও এমন ব্যবস্থা রাখা হবে। তাতে ক্রিকেট যে সম্প্রীতির কথা বলে, সেটি যেন উধাও হয়ে গেল। এক দেশ আরেক দেশে গিয়ে খেলে, এমনটিই দেখে আসছেন ভক্তরা। কিন্তু পাকিস্তান ও ভারতের বেলায় সেটি প্রযোজ্য হবে না। পাকিস্তানে বাকি ৭ দল যেতে রাজি হলেও ভারত যাবে না, এমন সমস্যার সমাধান বের করতে পারেনি আইসিসি। বরং ‘ভাগ করো ও শাসন করো’ পদ্ধতির মতো এক ব্যবস্থা চালু হয়েছে হাইব্রিড মডেল।