রাজধানীর হাজারীবাগে ট্যানারি কাঁচাবাজার এলাকার ফিনিক্স লেদারের গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিসকে। সংস্থাটি বলছে, অবকাঠামোগতভাবে ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় তাদের বেগ পেতে হয়েছে। এ ছাড়া বহুতল ভবনটিতে ছিল না কোনো সেফটি প্ল্যান। কয়েকবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকালে ভবনটির সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেন, আমাদের টিটিএল (টার্ন টেবল লেডার) পড়ে আছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের ভবনটির ভেতর থেকে কাজ করতে হয়েছে। বাইরের দিক থেকে যে কাজ করার কথা, সেটি করা সম্ভব হয়নি। কারণ টিটিএল বসানোর মতো অবস্থা এখানে নেই।
তিনি আরও বলেন, কনজাস্টেড জায়গা, আপনারাও দেখছেন। কাজ যতটুকু করতে পেরেছি ভবনের ভেতরের দিক দিয়ে। বাইরে থেকে খুব বেশি করা যায়নি। এটা এই এলাকার যে সেটাপ (অবকাঠামোগত গঠন), সেটার ব্যর্থতা। ফায়ার ফাইটাররা ভেতরে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থও হয়ে পড়ছিলেন বলেও জানান তিনি। তাদের বারবার বাইরে থেকে এসে শ্বাস নিয়ে যেতে হচ্ছিল।
তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, এটি একটি পুরাতন ভবন। ভবনটিতে মিশ্র পদার্থ ছিল, কাঁচামাল, প্লাস্টিক, গার্মেন্টস পণ্য এবং উপরে ছিল জুতার কারখানা। জুতার কারখানায় বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ রয়েছে। আমরা ভয় পাচ্ছিলাম এখানে ঘিঞ্জি এলাকা, আগুন বিস্তার লাভ করলে অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো। সেটি আমরা রোধ করতে পেরেছি, এটি আমাদের বড় সফলতা।
তিনি আরও বলেন, ভবনটিতে ছিল প্লাস্টিক, লেদারসহ দাহ্য বস্তুর কারখানা। ছিল না কোনো অগ্নিনিবারক যন্ত্র। ভবনে ফায়ার সেফটির কোনো প্ল্যান ছিল না। কয়েকবার নোটিশও দেওয়া হয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে।
ফায়ার সার্ভিসের সব ইকুইপমেন্ট এখানে আনা সত্ত্বেও সব কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। বলেন, এখানকার রাস্তা অনেক ছোট এবং ভবন একটির সঙ্গে আরেকটি লাগানো। আমরা ১৩টি ইউনিট এনেছিলাম, কিন্তু সব ইউনিট কাজ করতে পারিনি।
আগুন ভবনটির ৫, ৬ ও ৭ তলা পর্যন্ত ছড়িয়েছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, নিচের দিকে আগুন ছিল না। আগুনের সূত্রপাত এখনো বের করা যায়নি। তবে ইলেকট্রনিক শর্ট সার্কিট কিংবা সিগারেটের কারণে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। তদন্তের পর মূল কারণ জানা যাবে।