যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে যোগদানের ১০ দিন পর আবারও বদলি করা হয়েছে অধ্যাপক ড. খোন্দকার কামাল হাসানকে।
রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন কামাল হাসান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলেন বিতর্কিত ভূমিকা ও দুর্নীতির দায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছরের ২৯ অক্টোবর তাকে ওএসডি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
দুই মাস পর ৮ জানুয়ারি তাকে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করা হলে ফের বিতর্ক শুরু হয়। রোববার তাকে আবারও ওএসডি করে শিক্ষা অধিদপ্তরের সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওএসডির বিষয়ে অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান জানান, ‘বদলি চাকুরির নিয়ম। এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না’।
সাবেক আওয়ামী মন্ত্রীর মদদপুষ্টতার বিষয়ে এই অধ্যাপক দাবি করেন, ‘মন্ত্রী ফরহাদ হোসনের নির্বাচনি এলাকার কলেজে দায়িত্ব পালন করার সুবাদে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি আমার দায়িত্বশীল ভূমিকা ও ন্যায়পরায়ণতা দেখেই পছন্দ করতেন। তবে তা নিয়ে আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হইনি। যদিও তিনি সুপারিশ করেছিলেন’।
বঙ্গবন্ধুর কবর জিয়ারত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওই সময় শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারত করা রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। আমিও তাই করেছিলাম’।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকার বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘আন্দোলনে আমার দুই ছেলেও অংশ নিয়েছিল। ৬ আগস্ট ক্যাম্পাসে জানাজায় অংশ নিয়েছিলাম। অভিযোগ থাকলে ক্যাম্পাসে যেতে পারতাম না। শিক্ষার্থীদের কেউ আমার বিরুদ্ধে ছিলেন না। কয়েকজন শিক্ষক মিথ্যাচার করেছিল’।
১৪তম বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ব্যাচের খোন্দকার কামাল হাসান। ১৯৯৩ সালের মেহেরপুর সরকারি কলেজে পদার্থবিজ্ঞান প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে মেহেরপুর মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেন।
অভিযোগ উঠেছে, মেহেরপুরে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ফরহাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিতি পান। তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। মন্ত্রীর সুপারিশে ২০২৩ সালে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ পদে অধিষ্ঠিত হন। যোগদানের পর ১৮ নভেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন ও কবর জিয়ারতের ছবি কলেজের অফিসিয়াল ফেসবুক ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এছাড়া জুলাই বিপ্লবে বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন কামাল হাসান। ১৫ জুলাই কলেজ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের ওপর ককটেল হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কামাল হাসান ছাত্রলীগের পক্ষে অবস্থান নেন বলে অভিযোগ ওঠে।