রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ ইসমত আরার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে তার অপসারণ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারী) সকাল ১০ টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন শতশত অভিভাবক, শিক্ষার্থী, স্থানীয় জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা। মানববন্ধন শেষে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ ইসমত আরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়মে লিপ্ত। ষষ্ঠ, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি ও দশম শ্রেণির ফরম পূরণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরীক্ষার মূল্যায়ন বাবদ ফি আদায় করা হয়, যা সরকারি নির্দেশনার বাইরে।
গত কয়েক বছরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থের রশিদ প্রদান করা হয়নি এবং এই অর্থ বিদ্যালয়ের ক্যাশ বইতে অন্তর্ভুক্ত না করে প্রায় দুই লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এসএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও প্রশংসাপত্র বাবদ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
তৎকালীন জেলা শিক্ষা অফিসারের এক তদন্ত রিপোর্টে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগকে অবৈধ উল্লেখ করা হয়েছিল। অভিযোগ রয়েছে যে, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে পদোন্নতি ও এমপিওভুক্ত হয়েছেন।
বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও পরিবেশের অবনতি
অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষকের অদক্ষতা ও দূর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এবং শৃঙ্খলা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিতে তিনি নিজস্ব পছন্দের অযোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে আরও অস্থিতিশীল করেছে।
মানববন্ধনে এক অভিভাবক বলেন, “আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের কারণে। আমরা চাই, দ্রুত তার অপসারণ করে একজন যোগ্য ও সৎ শিক্ষককে নিয়োগ দেয়া হোক।”
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমাদের রেজিস্ট্রেশন ও পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন। আমরা সেই টাকা ফেরত চাই এবং সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ চাই।”
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোসাঃ ইসমত আরার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, “আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি এবং অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”