বিচার দাবি করে বৈষম্যবিরোধীদের ঢাবিতে বিক্ষোভ


, আপডেট করা হয়েছে : 26-01-2025

বিচার দাবি করে বৈষম্যবিরোধীদের ঢাবিতে বিক্ষোভ

ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত এ বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।


সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘বাংলাদেশের জুলাই অভ্যুত্থানকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসাবে দেখাতে চেয়েছে ভারত। তারা বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে ভারতে ঘৃণা ছড়াচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ড তারই ফল।’ যতদিন বাংলাদেশ সফল রাষ্ট্র না হবে, ততদিন রাজপথে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি।


বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের হাতে বাংলাদেশিদের খুন কোনো নতুন ঘটনা নয়। ভারত বাংলাদেশের মানুষকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করে একের পর এক খুন করেই চলেছে। গত ৫৪ বছরে ভারতের আধিপত্যের কারণে যত খুন হয়েছে তার সবগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’ সাবেক সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চায়। আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের স্বাধীনতা ভারতের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আপনারা যদি এই হত্যাকাণ্ডের বিচারে পদক্ষেপ না নেন তাহলে জনগণ সেটা মেনে নেবে না।’


এর আগে হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুর রামামূর্তি এলাকার কালকেরে লেকের কাছ থেকে এক বাংলাদেশি নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার লাশ উদ্ধার করে প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে নিহত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে।


পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশি ওই নারী একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও তিনি কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর আর বাসায় ফেরেননি। শুক্রবার সকালে কালকের লেকের পাড়ের নির্জন স্থানে স্থানীয়রা তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।


কর্ণাটক পুলিশ ২৮ বছর বয়সি বাংলাদেশি ওই নারীর পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি। তবে তারা জানিয়েছে, ওই নারীর পরিবারও রামামূর্তি এলাকাতেই থাকে। তার স্বামী বেঙ্গালুরু পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তাদের তিনটি ছোট সন্তান রয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, ‘নিহত নারী বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি ছয় বছর ধরে এখানে বসবাস করছিলেন। তার স্বামীর বৈধ পাসপোর্ট রয়েছে এবং তিনি মেডিকেল ভিসায় ভারতে এসেছেন। ২৩ জানুয়ারি ওই নারী তার সহকর্মীকে বলেছিলেন যে, তার কিছু ব্যক্তিগত কাজ রয়েছে এবং তাই কাজ শেষে বাড়ি ফিরতে দেরি হতে পারে। তাই সহকর্মীকে তাকে ছাড়াই চলে যেতে বলেছিলেন। কিন্তু এরপর অনেক রাত পর্যন্ত ওই নারী বাড়ি না ফেরায় সেই রাতেই রামমূর্তি নগর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার স্বামী।’


এরপর সেই পুলিশ কর্তা আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই নারী স্বেচ্ছায় কোনো নির্জন এলাকায় গিয়েছিলেন। সম্ভবত সেখানে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা করতেই তিনি গিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। দেখা যায়, পাথরের আঘাতে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। বাগ্বিতণ্ডার জেরে তিনি খুন হয়ে থাকতে পারেন। আমরা ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৬৩ এবং ১০৩ ধারায় একটি মামলা করেছি। নির্যাতিতার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমরা সেই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।’ এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে পূর্ব ডিভিশনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) দেবরাজ ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ডগ স্কোয়াডকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘আজ (২৪ জানুয়ারি) সকালে আমাদের কাছে একটি ফোন আসে। আমাদের জানানো হয়, কালকেরে লেকের কাছে একটি নির্জন এলাকায় এক মহিলার দেহ পড়ে আছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এটি একটি জঘন্য অপরাধ। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার