বর্তমানে ছোট পর্দার প্রিয়মুখ তানিয়া বৃষ্টি। সম্প্রতি তার একাধিক নাটক ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এসেছে। অভিনয় দিয়ে তিনি দর্শক গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, পেয়েছেন প্রশংসা।
ইউটিউবে এ অভিনেত্রীর ট্রেন্ডিংয়ে থাকা নাটকগুলোর মধ্যে অন্যতম নাটক ‘শ্বশুর আব্বার টি-স্টল’। গ্রামীণ হাস্যরসাত্মক গল্পে নির্মিত নাটকটি মুক্তির মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ১ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে। পারিবারিক ঝগড়া, সামাজিক টানাপোড়েন আর হাস্যরসের মজায় ভরপুর এ নাটক বুধবার ২৯ জানুয়ারি ইউটিব চ্যানেলে প্রচারিত হয়। জুয়েল এলিনের লেখা নাটকটি পরিচালনা করেছেন জাকিউল ইসলাম রিপন।
এই নাটকে তানিয়া বৃষ্টি জুটি বেঁধেছেন সময়ের জনপ্রিয় মুখ শামীম হাসান সরকারের সঙ্গে। নাটকটির গল্পে দেখা যায়, সদ্য বিবাহিত এক দম্পতি গ্রেমের টানে এক নতুন জিীবনে পা বাড়ায়। পালিয়ে বিয়ে করে। দুই পরিবার থেকেই বঞ্চিত হন এ নব দম্পতি একমাত্র সম্বল ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মেয়ে কাজ নেয় মানুষের বাসাবাড়িতে। নানা ঘটনায় এগিয়ে যেতে থাকে এর গল্প।
নাটকটি প্রসঙ্গে তানিয়া বৃষ্টি বলেন, ‘খুব দ্রুত সময়ে ১ মিলিয়ন দর্শক নাটকাটি দেখেছেন। এটি নাটকের পুরো টিমের জন্য খুব ভালো খবর। এটি খুব মজার একটি নাটক। দর্শকরা পছন্দ করেছেন এতে আমি খুশি। নাটকটির শুটিংয়ের সময় মনে হচ্ছিল ভালো একটি কাজ হতে যাচ্ছে। কষ্ট করার মিষ্টি ফলাফল শিল্পীকে আনন্দ দেয়।'
শামীম-তানিয়া ছাড়াও নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবদুল্লাম রানা, সিদ্দিক মাষ্টার, মিলি বাসার, বাপ্পি বাসার, কাদরুন নামার, সোমেল হাগান, মিরামনি প্রমুখ। মডেল ও অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টি ভিট চ্যানেল আই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় রানার আপের বিজয়ী। ২০১৫ সালে 'ঘাসফুল' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিষেক হয় তার। এরপর থেকে নিয়মিত কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন তিনি। নাটকে অভিনয় করে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন এই অভিনেত্রী।
‘সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো…’ — এমন পরিস্থিতি কি আপনার জীবনে কখনো এসেছে? আসাটা খুব স্বাভাবিক। ক্রীড়াপ্রেমি হয়ে থাকলে খেলাধুলার মানুষজন, ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। লিওনেল মেসি, ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, শচিন টেন্ডুলকার, বিরাট কোহলিদের জীবনের গল্পের দিকে তাকিয়ে আপনি চাইলেই আপনার মনকে শক্ত করে আগে বাড়তে পারেন।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে দেশীয় কারো নাম কি চট করে আপনার মগজে খেলে যায়? কেউ কি সেভাবে আপনাকে টানে? সংখ্যাটা খুব বড় নয়। তবে ১৯৮৬ সালের আজকের এই দিনে জন্ম নেওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সেই অল্পেরই দলে পড়বেন, তা বাজি ধরে বলা যায়।
মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারে অর্জন এমনিতে কম নেই। আইসিসি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এখন তার দখলে। এই একটা পরিচয়ই তো তাকে দেশের কিংবদন্তি বানিয়ে দিতে যথেষ্ট, দেশের আইসিসি টুর্নামেন্টের ইতিহাস যে খুব সমৃদ্ধ নয়!
তবে সব ছাপিয়ে তার ক্যারিয়ারের হাইলাইটস বুঝি ২০২৩ সালটা। সে বছরের প্রথম সিরিজ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দল হারল। এরপরের সিরিজে তাকে দলে রাখাই হলো না। বলা হলো – বিশ্রামে আছেন তিনি। যে ‘বিশ্রামের’ ব্যাপ্তি সে সিরিজ পেরিয়ে চলে গেল আফগানিস্তান পর্যন্তও। তখনই নিশ্চিত হয়ে গেল, বিশ্রাম নয়, বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপের রাডারে নেই তিনি।
কারণ ছিল কী? বোলিংটা তিনি করেন না কাঁধের চোট পাওয়ার পর থেকে, বয়সের কারণে ফিল্ডিংও যথেষ্ট মন্থরগতির, যা আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে বেমানান, শেষে নামলে ব্যাটিংটা যেমন করা দরকার, তার ব্যাটিংও তেমন যুতসই নয়। সব মিলিয়ে দল থেকে ব্রাত্য হয়ে পড়লেন।
তার বয়স তখন ৩৬ পেরিয়ে গেছে, সে বয়সে আর সবাই তল্পিতল্পা গোটাতে ব্যস্ত থাকে। দলটা যদি বাংলাদেশ হয়, তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই! সব মিলিয়ে সে সময়টা হয়ে দাঁড়িয়েছিল মাহমুদউল্লাহর ‘সব যে হয়ে গেল কালো, নিবে গেল দীপের আলো…’ মুহূর্ত, তার শেষ প্রায় সবাই দেখে ফেলেছিলেন।
গণমাধ্যমে কথা বলা প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরপরই। ওভাবে যখন বিশ্বকাপের ঠিক আগে দল থেকে বাদ পড়লেন, এরপরও কারো কাছে সাক্ষাৎকার দেননি। তিনি জানতেন, তার হাতে আছে তার পারফর্ম্যান্স। দল যখন আফগানিস্তান সিরিজ, এশিয়া কাপে ব্যস্ত, তখন তিনি সময়টা ব্যয় করলেন নিজের ওপর। পাওয়ার হিটিংয়ে মরচে ধরে গিয়েছিল, সেখানে শান দিয়েছেন। ফিটনেসের উন্নতি নিয়েও যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন।
এমন স্পৃহাকে অগ্রাহ্য করা প্রায় অসম্ভব। তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তা করতে পারেনওনি। ফলে বিশ্বকাপে পা রাখেন তিনি, নৈতিক বিজয়টা তখনই পাওয়া হয়ে গিয়েছিল। তবে তিনি সেখানে থামতে চাননি। আইসিসি টুর্নামেন্ট পেলে যার ব্যাট কারিশমা দেখায়, তিনি স্রেফ দলে জায়গা পেয়েই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে চাইতেন না। তিনি তা করেনওনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেন এক সেঞ্চুরি, দলকে লজ্জার হার থেকে রক্ষা করে যা।
এ তো গেল এক টুর্নামেন্টের কথা? তার আগে? আইসিসি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরিটা এসেছিল তার ব্যাট দিয়ে। কোন ম্যাচে মনে আছে নিশ্চয়ই? নাহয় আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া যাক, সেটা ছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, অ্যাডিলেইডে। সে সেঞ্চুরিটা তিনি করলেন, দল শেষমেশ তাতে ভর করে চলে যায় বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে, প্রথম বারের মতো। করলেন নিউজিল্যান্ডের পরের ম্যাচেও।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আইসিসি ইভেন্টে আরও একটা সেঞ্চুরি আছে তার। পরের সেঞ্চুরিটা বেশি বিখ্যাত। জিতলেই সেমিফাইনালে, এই সমীকরণ নিয়ে খেলতে নেমে ২৬৫ রানের লক্ষ্য পায় দল। ৩৩ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে দল যখন দিশেহারা, তার সেঞ্চুরিটা এসেছিল ঠিক তখন। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ খেলে কোনো আইসিসি ইভেন্টের সেমিফাইনালে।
তাকে অবশ্য শুধু বিশ্বকাপ দিয়ে মাপলে ঠিক হবে না, এর বাইরেও যে কতশত অবদান! নিজের প্রথম টেস্টেই তো দলকে জিতিয়েছিলেন তিনি, সেটা অবশ্য ব্যাটিং নয়, বোলিং দিয়ে। ৫১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি দলকে এনে দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৫ রানের মধুর এক জয়। যা আবার বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রথম জয়ও!
তার ভূমিকাটা আকারে ছোট, কিন্তু গুরুত্বের দিক থেকে বেশ বড়। এবারের বিপিএলে দেখুন— বোলিং খুব একটা করেন না, ফরচুন বরিশালের তারকাখচিত লাইন আপের জন্য ব্যাটিংয়েও খুব একটা নামতে হয় না। তবে যখনই নামছেন, ছাপ রেখে যাচ্ছেন। দ্রুত রান তুলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বহুদূরে। এ অবশ্য মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারেরই প্রতিচ্ছবি।
ক্যারিয়ারে অর্জন নেহায়েত কম নয়। তবে আইসিসি ইভেন্টে এমন কিছু কাজ করেছেন, যার কারণে মাহমুদউল্লাহ মানেই আইসিসি ইভেন্ট এমন একটা ভাবমূর্তি দাঁড়িয়ে গেছে। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিই যে তার শেষ আসর, তা আর আলাদা করে বলে না দিলেও হয়। টি-টোয়েন্টি বাদে বাকি সব কিছু থেকে তার বিদায়টা হয়েছে বেশ মধুরভাবে। শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন, শেষ আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপেও আছে বেশ কিছু দারুণ ইনিংস। এবার তিনি আরও একটা ‘শেষ’, আরও একটা আইসিসি ইভেন্টের সামনে দাঁড়িয়ে।
জীবনের ৩৯টি বছর পেরিয়ে ৪০ এ পা দেওয়া মাহমুদউল্লাহ নিশ্চয়ই এই ‘শেষ’টাও ভালো করেই চাইবেন!