নারী ফুটবল দলের কোচ ইস্যুতে উত্তাল দেশের ফুটবলঅঙ্গন। কোচ পিটার বাটলারের অধীনে না খেলতে চান না সিনিয়র ফুটবলাররা। তিনি কোচ থাকলে গণ অবসরের হুমকিও দিয়েছেন সাবিনা-সানজিদারা। এমন পরিস্থিতিতে সাফজয়ী দলের অন্যতম নারী ফুটবলার জাপানি বংশোদ্ভূত মাতসুশিমা সুমাইয়া জানালেন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা! কয়েকদিন ধরে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সাফজয়ী এই নারী ফুটবলার।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে দুটি ছবি দিয়ে এক পোস্টে সুমাইয়া লেখেন, ‘আসসালামু আলাইকুম। আমি মাতসুশিমা সুমাইয়া, বাংলাদেশ নারী জাতীয় ফুটবল দলের একজন খেলোয়াড়। ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্রী হিসেবে ইন্টার স্কুলে খেলা থেকে শুরু করে মালদ্বীপে লিগ জয় এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশের হয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের অভিজ্ঞতা আমার জন্য ছিল অম্ল-মধুর ছিল।’
ফুটবলকে বেছে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে তিনি আরও লেখেন, ‘যখন এই পথ বেছে নিয়েছি, আমার স্বপ্ন ছিল তরুণ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করা; যাদের বাবা-মা চান তারা শুধু পড়াশোনাতেই মনোযোগী থাকুক। আমি দেখাতে চেয়েছি আবেগ এবং সংকল্প যে কোনও প্রতিবন্ধকতা ভেঙে দিতে পারে। কিন্তু আজ আফসোস করে বলতে হচ্ছে- আমার শিক্ষা, পরিবার, ঈদ- সবকিছু এমন একটি দেশের জন্য উৎসর্গ করেছি, যারা আমাদের সংগ্রামগুলোর প্রশংসা করতে জানে না।’
কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউইয়ালকে একটি চিঠি দিয়েছেন নারী ফুটবলাররা। শোনা যাচ্ছে, ইংরেজিতে সেই চিঠি লিখেছেন সুমাইয়া। এরপর থেকেই ধর্ষণ আর হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
চিঠির বিষয়টি উল্লেখ করে সুমাইয়া লেখেন, ‘ফুটবল খেলার জন্য বাবা-মায়ের সঙ্গে লড়াই করেছি এই বিশ্বাসে যে, হয়তো একদিন দেশ আমার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। কেউ আসলে ক্রীড়াবিদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা করে না। যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, সে সম্পর্কে নিজের এবং সতীর্থদের নিয়ে ইংরেজিতে একটি চিঠি লেখার ন্যূনতম দক্ষতা আমার আছে। গত কয়েকদিন ধরে আমি অগণিত মৃত্যু এবং ধর্ষণের হুমকি পেয়েছি- যেসব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে, সেটা আমাকে এমনভাবে ভেঙে দিয়েছে যা কল্পনাও করিনি। জানি না এই মানসিক আঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে কত দিন লাগবে। তবে এটা জানি, কেবল স্বপ্ন পূরণের জন্য কাউকে যেন এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে না হয়।’