বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে ঢাকা বারের চিঠি


, আপডেট করা হয়েছে : 13-02-2025

বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে ঢাকা বারের চিঠি

আইনজীবীদের আন্দোলনে বিচারকাজ বন্ধ থাকা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে ঢাকা আইনজীবী সমিতি।


আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচার অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করাসহ বিচারকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঢাকা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বুধবার এ আবেদন করেন।


বৃহস্পতিবার আবেদনের বিষয়টি জানা গেছে। 


আবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি যোগদান করা ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম প্রতিনিয়ত জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অযাচিত বক্তব্য প্রদান এবং বিচারপ্রার্থীদের প্রকাশ্য আদালতে গালাগালি, অশ্লীল বক্তব্য ও অবিচারিক আচরণ করতে থাকেন। 


আবেদনে আরও বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র ও সাধারণ আইনজীবীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বার অ্যাসোসিয়েশন ও বেঞ্চের মধ্যে আদালত অঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আলোচনার অনুরোধ করা হয়। বিচারক নুরে আলম সাক্ষাৎ বা আলোচনার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি এডিসি নাসির আহমেদ হাওলাদার ও এসি প্রসিকিউশন হাসান রাশেদ পরাগের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আদালতের এজলাস শুরু করেন। 


বিশেষভাবে উল্লেখ্য গত ৯ ও ১০ ফেব্রুয়ারি ওই আদালতে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কোনো কর্মকর্তা বা কার্যকরী সদস্য কোনো মামলা বা জামিন শুনানি করেননি। বিচারক নুরে আলমের এমন আচরণের সংবাদ পেয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কয়েকজন কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বিচারককে সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আলোচনা করার বিষয়ে জানতে চান। বিচারক প্রথমেই বলেন, আমি কি ঢাকা আইনজীবী সমিতির চাকরি করি? কেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কমিটির সাথে আমার কথা বলতে হবে? আমি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে কথা বলব না। 


এই বলে পুলিশকে আদেশ দেন,‘এই পুলিশ ওদেরকে বের করে দাও।’


তিনি বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক, অশ্রাব্য ভাষা ও আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে উপস্থিত আইনজীবীদের উত্তেজিত করেন। তার কোটের হাতা ওপরের দিকে টেনে মারমুখী হয়ে উঠে গুলি করতে বললে কোর্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।


তিনি বিভিন্ন অসত্য তথ্য ও এজলাসের আংশিক ভিডিও বেআইনিভাবে যমুনা টিভির মাধ্যমে অপপ্রচার করে আইনজীবীদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও বাংলাদেশের মানুষসহ সারা বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রয়াস চালাচ্ছে। যা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।  


চিঠিতে বিচারক নুরে আলমের অসৌজন্যমূলক, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচার অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রার্থনা করেন তিনি।


আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিচারক নুরে আলম গতকাল বুধবার থেকে ছুটিতে রয়েছেন।



  • সম্পাদক ও প্রকাশক: ইঞ্জিনিয়ার মো: রায়হানুল ইসলাম

  • উপদেষ্টাঃ মোঃ ইব্রাহীম হায়দার