অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির প্রাণঘাতী অস্ত্রের সামনে হিমালয়ের মতো দাঁড়িয়েছিলেন আমাদের মেয়েরা। আজকের দিনে স্মরণ করি সেই সব শহিদ নারীদের, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের শ্রমিক, ছাত্র-জনতা মিলে যে অসাধ্য সাধন করেছেন তার সম্মুখ সারির ভূমিকায় ছিলেন এ দেশের নারীরা।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে নারীরা সম্মুখ সারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনো অনেকক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে-কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ নানা ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার। অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যাতে তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন, সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইন সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা আইন-২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সুরক্ষা আইন প্রণয়নের কাজেও আমরা হাত দিয়েছি। আমরা একটি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি। তারা তাদের সুপারিশগুলো শিগগিরই দেবেন।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা ও শ্রেষ্ঠ অদম্য নারীদের সম্মাননা প্রদান করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
এ বছর ‘অদম্য নারী পুরস্কার ২০২৫’-এর বিশেষ সম্মাননা পেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দল। পাশাপাশি, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী ক্যাটাগরিতে শরীফা সুলতানা, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে হালিমা বেগম, সফল জননী মেরিনা বেসরা, নির্যাতনের দুঃস্বপ্ন মুছে জীবনসংগ্রামে জয়ী নারী লিপি বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অবদানের জন্য মুহিন (মোহনা) সম্মাননা পেয়েছেন।